avertisements 2

রিক্ত হস্তেই ফিরলো বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫২ এএম, ৫ মে,রবিবার,২০২৪

Text

বাংলাদেশের জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচটি হয়ে দাড়িয়েছিলো স্রেফ নিয়ম রক্ষার। তবে এই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে অধরা জয় তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে চেয়েছিলো টিম টাইগার্স। সাকিব-লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ছন্নছাড়া বোলিং-ফিল্ডিংয়ে সেই আশা আর পূরণ হলো না বাংলাদেশের। পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে রিক্ত হস্তেই ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ।

নিয়ম রক্ষার এই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষ প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে বাংলাদেশ। ১৭৪ রানের লক্ষ্যটা বড় মনে হলেও পাকিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর বাবর আজমের ব্যাটিংয়ে তা যেন হয়ে যায় একেবারেই ছোট। দুই ওপেনারের ফিফটিতে ৭ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।

এর আগে ক্রাইটচার্চের হ্যাগলি ওভালে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা অবশ্য একেবারেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের।শুরুতেই দুই ওপেনার হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বাংলাদেশকে আবারও ট্র্যাকে ফেরান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর লিটন দাস মিলে।

নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক তুলে নিয়ে লিটন ফিরে যাওয়ার পর ফিফটি তুলে নেন সাকিব আল হাসানও। গত ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ঝড়ো ফিফটির পর আজ পাকিস্তানের বিপক্ষেও স্ট্রোক প্লে'র পসরা সাজিয়েই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১২তম ফিফটি পেয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। 

দুই ব্যাটারের ফিফটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ক্রাইস্টচার্চে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে ধ্বস নামার পুরোনো জুজু ভর করলেও এবার অবশ্য আর তা নামতে দেননি লিটন দাস আর সাকিব আল হাসান।

দুই ফিফটিতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে নাসিম শাহ আর মোহাম্মদ ওয়াসিম নিয়েছেন দুইটি করে উইকেট। 

১৭৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটিতে বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে যেন উইকেটে শিকড় গেড়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। ১০ ওভার পেরিয়ে গেলেও সেই জুটি ভাঙ্গতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো বোলার। শেষ পর্যন্ত দুই ওপেনারের শতরানের জুটি ভেঙ্গেছেন টাইগার পেসার হাসান মাহমুদ। শুধু জুটিই ভাঙ্গেননি, একই ওভারে জোড়া আঘাতে পাকিস্তানকে ভালোই ধাক্কা দিয়েছেন হাসান মাহমুদ।

১৭৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আর রিজওয়ান। ১২ ওভারে বিনা উইকেটেই দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেন ১০০ রান। অপ্রতিরোধ্যভাবেই পাকিস্তানকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটার।

ইনিংসের ১২তম ওভারে ৩৭ বলে নিজের ফিফটিও তুলে নেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। ওই ওভার শেষে ৩৫ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ানও। আগের ওভারেই অবশ্য ফাইন লেগে রিজওয়ানের ক্যাচ ছাড়েন সাইফউদ্দিন। 

উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানই যখনই ছুটছে তখনই দৃশ্যপটে হাসান মাহমুদ। তরুণ এই টাইগার পেসার ইনিংসের ১৩তম ওভারে বল করতে এসে তৃতীয় বলেই ফেরান বাবর আজমকে। আগের ওভারেই ফিফটি তুলে নেওয়া বাবরকে বিপদজনক হয়ে ওঠার পথেই ক্যাচ দেওয়ান মোসাদ্দেকের হাতে। ৪০ বলে ৯ চারে ৫৫ রান করে ফিরে যান বাবর। 

বাবরকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার এক বল পরেই আবারও বাংলাদেশকে উল্লাসে মাতান হাসান মাহমুদ। তিন নম্বরে উইকেটে আসা হায়দার আলীকে প্রথম বলটি ডট দেন হাসান। পরের বলেই তাকে সরাসরি বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে পথ দেখান হাসান মাহমুদ। 

বিনা উইকেটেই ১০০ রান পার করা পাকিস্তান মুহুর্তের মধ্যে জোড়া ধাক্কায়  ১৩ ওভার শেষে পরিণত হয় ২ উইকেটে ১০২ রানে। দুই উইকেট হারালেও তখনও অবশ্য ৩৬ বলে ৪৩ রান নিয়ে বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়েই ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। 

সেই রিজওয়ান পরে তুলে নিয়েছেন নিজের ফিফটি, সঙ্গে নিশ্চিত করেছেন দলের জয়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে মোহাম্মদ নেওয়াজও ঝড় তুলেছিলেন টাইগার বোলারদের ওপর। বলা যায় রিজওয়ান যেখানে ধরে রেখেছিলেন সুনিপুণ হাতে, নেওয়াজ সেখানে পূর্ণতা দিয়েছেন টর্নেডো ব্যাটিংয়ে।

৩২ রানে জীবন পাওয়া রিজওয়ান পরে খেলেছেন ৫৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস। হাসান মাহমুদের জোড়া উইকেটের পর রিজওয়ান টিকে থাকলেও জয়ের আশা দেখছিলো বাংলাদেশ। উইকেট না নিতে পারলেও রান তোলায় পাকিস্তানকে চেপে ধরেছিলো বাংলাদেশ। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য ৬২ রানের প্রয়োজন ছিলো পাকিস্তানের। সাকিব আল হাসানের করা ইনিংসের ১৫তম ওভার থেকেই ঝড় তোলেন নেওয়াজ। সাকিবের ওভারের শেষ তিন বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ১৭ রান তোলে পাকিস্তান।

শরিফুলের পরের ওভারে কোনো বাউন্ডারি না পেলেও তার পরের ১৭তম ওভারে সাইফউদ্দিনের কাছ থেকে ১২ রান আদায় করে নেন নেওয়াজ। এই ওভারেই ম্যাচ নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেইয় পাকিস্তান। শেষ তিন ওভারে পাকিস্তানের জুয়ের জন্য লাগতো ২৫ রান।

১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে অবশ্য রিজওয়ানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের নিভু নিভু প্রদীপকে আরেকবার উসকে দিয়েছেন সৌম্য সরকার। এতে অবশ্য কোনো লাভই হয়নি বাংলাদেশের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান লাগতো পাকিস্তানের।  ওভারের পঞ্চম বলে সাইফউদ্দিনকে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন নেওয়াজ। তার ৫ চার আর ১ ছক্কায় ২০ বলে ৪৫ রানের ঝড়েই ১ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে হেরে ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ করে বাংলাদেশ।

আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় শিরোপার লড়াইয়ে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামবে পাকিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭৩/৬ (লিটন ৬৯, সাকিব ৬৮; নাসিম ৪-০-২৭-২, ওয়াসিম ৪-০-৩৩-২)

পাকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৭৭/৩ (রিজওয়ান ৬৯, বাবর ৫৫, নেওয়াজ ৪৫*; হাসান ৪-০-২৭-২, সৌম্য ১-০-৬-১)

ফলাফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী। 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2