
জালাল উদ্দিন আহমেদ
৩৬শে জুলাই এবং দেশের শাসন ব্যবস্থার সংস্কার
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:৫৬ পিএম, ১৭ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২৫

আমাদের এই স্বাধীন ভূখন্ডে গত পনের ষোল বছরে জগদ্দল পাথরের মত জেঁকে বসা আওয়ামী স্বৈর শাসন যখন একটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের রূপ নিয়ে বাঙালীর বুকে তাদের অসুরীয় চেহেরায় দুর্বার হচ্ছিল তখন কোন দল বা গোষ্ঠীর লেজুড়বৃত্তি না করেও সাধারন ছাত্রদের মধ্যে সমন্বকের ভূমিকা নিয়ে নির্দলীয়ভাবে কতিপয় ছাত্র নিজেদের মধ্যে সমন্বয় তৈরী করে। নিজেদের জীবন গড়ার প্রবেশ পথে অনিয়ন্ত্রিত সরকারী বৈষম্যের সাম্যতা অনয়নের লক্ষ্যে তারা একাট্টা হয়। কিন্তু যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয় এর যোগসূত্রে জনবিছিন্ন স্বৈরশাসক, ছাত্রদের এই আন্দোলনে বিরোধী রাজনীতির ভূত দেখতে পায়। ফলে রাজনীতি দমনের স্টাইলে সরকারী মেকানিজম ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশের সাধারন জনগন যাদের ছেলেমেয়েরাও এই আন্দোলনে সামিল বা সামিল হওয়ার প্রস্তুতিতে ঐক্যবদ্ধ, তখন আর রাজনীতির ভাগাভাগির সমীকরনে না থেকে ছাত্রদের পক্ষে এগিয়ে আসে। ফলশ্রুতিতে ছাত্র আন্দোলনের চাকা আস্তেধীরে গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। তুষের আগুনে ধিকিধিকি জ্বলে থাকা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের জ্বালামুখগুলি একসঙ্গে জ্বলে উঠে।
তঞ্চকতার রাজনীতি তখনও নিজেদের বাউন্ডারীর বাইরে না গিয়ে শুধুমাত্র বিচ্ছিন্ন কথাবার্তা আর বিবৃতি দিয়েই দায়সারা থাকতে চায়। নিজেদের দেউলিয়াত্ব প্রমানে রাজনীতির পক্ষগুলি একে অপরের সন্দেহের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। নিজেদের তথা দেশের সামগ্রিকতার ক্ষেত্র প্রস্তুতে তারা দ্বিধান্বিত হন। ফলে দেশের সামষ্টিক ভাল মন্দের প্রশ্নে রাজনীতির বিরোধী পক্ষ একবিন্দুতে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়। ততদিনে তাদের পায়ের মাটি আলগা হয়ে যায়। সাধারন সমর্থকের বিশাল জনগোষ্ঠী আমজনতার রূপ নিয়ে ছাত্রদের তারাজুতে উঠে পড়ে। দেশের রাজনীতি তখন আর আওয়ামী বিএনপিতে শিকলবদ্ধ থাকেনা। কারন বিদ্যমান রাজনীতির আড়তদারেরা ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রকাশ্য সওয়ারী বা শরীক হতে ব্যর্থ হন। তাছাড়া রাজনীতির ঠিকাদারেরা তাদের ডাবল স্যান্ডারড বা দ্বিমুখী আচরনের ফলে ততদিনে কিছুটা হলেও সাধারন জনগনের থেকে দূরত্ব সৃষ্টি করে ফেলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্তমান রাজনীতি তাদের পূর্বপুরুষের আদর্শ ত্যাগ, তিতিক্ষা, সততা, সহমর্মিতা ও নৈতিকতার পথ পরিহার করে লোভ লালসা ও অসদুপায়ের পথে নিজে এবং তার পরিমন্ডলকে কলুষিত করেছে। দেশের সাধারন জনগন বর্তমান সময়ের রাজনীতির এহেন দ্বিচারিতায় একপ্রকার বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে বিগত দিনের অবৈধ শাসক শ্রেনীর শত অত্যাচার অনাচার মুখ বুজে সহ্য করেও জনগনের সিংহভাগ অংশ বর্তমান বিরোধী রাজনীতির তথাকথিত কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফুর্ত হতে পারেনি
সময়ের দ্রুতগতিতায় ছাত্র রাজনীতির কোটা বৈষম্যের আন্দোলন অবশেষে এক দফা এক দাবীর রূপ নিয়ে স্বৈরাচার হঠাও এর আন্দোলনে রূপ নেয়। এভাবেই আপন দেশে নিজ আপন স্বত্ত্বার শাসক গোঠীর নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে ছাত্র জনতা দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করে। বিষয়টি কোন গঁদ বাধা সমীকরনের সরলীকরন নয়। এ এক জটিল বিষফোঁড়া অপসারনে গ্রাম্য আয়োজনের কবিরাজি ব্লেড খুরের আয়োজন। এ খুরের ধার এবং ভার দুটোই সমান। আর এই ধার অর্থাৎ ছাত্রদের অদম্য দুঃসাহসিক মুষ্টিবদ্ধতা এবং ভার অর্থাৎ সাধারন জনগনের একাত্ম হয়ে মাঠে নামার ফসলই হচ্ছে জুলাই’'২৪ বিপ্লবের সারমর্ম। এই মোহনায় পৌঁছাতে ছাত্ররা যেমন জীবন বাজি রেখে দুর্বার হয়েছে, দেশের সাধারন জনগনও সেরূপ রক্তাক্ত রাজপথে নিজেদের বলিদান দিয়েছে। জুলাই থেকে পাঁচ আগষ্ট পর্যন্ত সময়টাকে ৩৬ জুলাই বলে সম্বোধন করা হয়। জুলাইয়ের ছাত্র অন্দোলনের উজ্জ্বলতা বাংলার জনগনকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচ আগষ্টে স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীর পতনের মাধ্যমে সফলতা পেয়েছে বলেই অনেকেই এটাকে ৩৬ জুলাই বলে বুক ভরে শ্বাস নেন। রাজনীতির তথাকথিত বাক্যবুলি আর ছকবাঁধা আয়োজন বাঙালীকে স্বস্তি দিতে পারেনি। ফলে সামান্য কচি কাঁচাদের ছাত্র দাবির কোটা আন্দোলনের ছোট্ট একটি ফোঁড়া যেন বিষ্ফোঁড় হয়ে গোটা জাতিকে তাদের জমিয়ে রাখা অসন্তোষের তুষের আগুনে ঘি ঢেলে দিল।
ছাত্র জনতার মুষ্টিবদ্ধ প্রতিবাদের কথাটা এসেই গেল। আসবেই বা না কেন! এতো যে সে কথা নয়। জগদ্দল পাথরের মত একমুখী শাসনের যে কালাপাহাড় বাংলাদেশী বাঙালীর উপর গত পনেরটি বছর স্বেচ্ছাচারিতা করেছে তার উত্তর দিতেই তো বাংলার দামাল ছেলেদের এই জীবন মরন লড়াই। লড়াইয়ে তারা জিতেছে। জিতিয়েছে বাংলার সাধারন আম জনতাকে। জিতিয়েছে বাংলাদেশকে। আজকে সেই জেতা বা জয়লাভের যুগ সন্ধিক্ষনে বাঙালী তার স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরীর উচ্চাকাঙ্খায় দেশের একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে সামনে রেখে তাদের দেশ গড়ার স্বপ্ন দ্যাখে। বিশ্ব নন্দিত এই ক্ষনজন্মা নোবেল লরিয়েটকে সামনে রেখে তারা দেশ সংস্কারের পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে তিনি দেশের রাজনীতি ও শাসন নীতির শতবর্ষীয় জ্বরাজীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে নতুনভাবে এগোতে চান। ফলশ্রুতিতে দেশের সেরা সন্তানদের সমন্বয় করে গঠিত হয় ঐক্যমত্য কমিশন। দেশের রাজনীতি অর্থনীতি সরকারী মেকানিজম এবং শাসন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সেক্টর ভিত্তিক সংস্কার কমিশন তাদের কাজ শুরু করে। গণমানুষের একাত্মতায় দেশে এক গণ আকাঙ্খার বাতাবরন বইতে থাকে। বর্তমান কাঠামোয় বিদ্যমান রাজনীতির পক্ষগুলিকে সঙ্গে নিয়েই এই পথযাত্রা শুরু হয়।
বাংলায় একটি জনপ্রিয় গান আছে। আবাল বৃদ্ধ বনিতার প্রিয় গান এটি। “আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাব না”, বহুল শ্রুত এই গানটি আজ দেশের রাজনীতির ক্ষমতাভোগী রাজনীতিকদের চলনে বলনে বেশ দৃশ্যমান বলেই মনে হয়। তারা বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতার মসনদে বসে পূর্বের ন্যায় দৌর্দন্ড প্রতাপ নিয়ে দেশ শাসনের কর্তা হতে চান। ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া এসব রাজনীতির পক্ষ ঘুণাক্ষরেও বুঝতে চান না যে ঘরের চৌকাঠে ঘুণ ধরেছে। এ চৌকাঠ পাল্টাতে হবে। হে অষ্টাদশী সুন্দরী রমনী, তোমার বেণীতে যে জট লেগেছে, আর সেই জটার মধ্যে উকুন কিলবিল করছে তা কি তোমার জানা আছে! নিজের সোন্দর্যের সেইফ সাইডে বিচরনের লক্ষ্যে তুমি যে আবদার করছো তার ফল যে ভাল হবে না তা কি তুমি অনুধাবন করেছো? আমাদের রাজনীতির তথাকথিত ক্ষমতাপ্রিয় মহারথীদের বলছি, গত অর্ধ শতাব্দী ধরে আপনারা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের নামে যে ইট সুরকির হেরিং বন্ডে চলাফেরা করেছেন তা কি এতদিনে মসৃণ করতে পেরছেন? আপনাদের এই ক্ষমতা লিপ্সুতার খেসারতে বাংলা তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অকালে হারিয়েছে। নিজেদের অযোগ্যতার খেসারতে বার বার সামরিক শাসন ফিরে এসে দেশের সম্ভাবনার দরজাকে রূদ্ধ করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী চুয়ান্ন বছরে গদবাঁধা রাজনীতি আর বংশ পরম্পরার গণতান্ত্রিক পথচলায় দেশের শাসন ব্যবস্থার বেণীতে জট লেগেছে এবং সেই জটে সৃষ্ট ঘুনেধরা উইপোকার ঢিপি দেশকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই ঘুনে ধরা রাজনীতি ও গণতন্ত্র অর্ধ শতাব্দীর বাংলাদেশকে ভোগান্তি বৈ ভাল কিছু দিয়েছে কি? যদিওবা সুন্দর স্বচ্ছতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু রাজনীতির অস্বচ্ছতা ও অদূরদর্শিতার কারনে বাঙালী খুন রাহাজানি আর দেশের শ্রেষ্ট সন্তানদের হারানো ছাড়া আর কিছু পায়নি। আজ যখন বিশ্ব নন্দিত একজন সফল বাঙালী সন্তান তার ঐকান্তিকতা নিয়ে বাংলা বাঙালীর রাজনীতি ও সরকার পদ্ধতির সংস্কার করনের সদিচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন তখন সবার এগিয়ে আসা উচিত নয় কি? বাংলার জনগনের জন্য এবং বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য হলেও নিদেনপক্ষে দেশ সংস্কারের পথে তাদের হাঁটা উচিত। তাঁকে সার্বিক সহয়তা করে দেশকে জনগনতন্ত্রমুখী করে গড়ে তোলার শপথে সবার একান্ত হওয়া অপরিহার্য বলে মনে করি। আশা করি রাজনীতির ‘'বড়ে গোলাম’’ হোসেনদের মাথায় এই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ: প্রেস উইং

৩৬শে জুলাই এবং দেশের শাসন ব্যবস্থার সংস্কার

সমুদ্র উপকূলে নিষেধাজ্ঞা: গাজাবাসীর শেষ আশ্রয় কেড়ে নিল ইসরায়েল

৭৯৬ শিশুর মৃত্যুর রহস্যের জট খুলতে গণকবর খোঁড়া হচ্ছে আয়ারল্যান্ডে

শামীম ওসমান ও স্ত্রীর ৪৫০ কোটির সন্দেহজনক লেনদেন, দুদকের মামলা

বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

আবু সাঈদ-মুগ্ধদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা করতে হাইকোর্টের রুল

বাংলাদেশের বেতন-ভাতায় নিয়ে ভারতে থাকেন শিক্ষক দম্পতি

হঠাৎ কোটা ব্যবস্থা নিয়ে ফেসবুকে আসিফ নজরুলের পোষ্ট

এনবিআরের আন্দোলন ছিল সরকারবিরোধী, লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক ক্ষতির

‘তুমি ফুয়েল বন্ধ করলে কেন?’–এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের শেষ কথাবার্তা

বিএনপি যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে

হাসিনাকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বাধ্যতামূলক ছুটিতে

বন্ধ ফ্ল্যাটে ৬ মাস ধরে পড়েছিল অভিনেত্রী হুমাইরার মরদেহ

কোথা থেকে এতো সুন্দর ইংরেজি বলা শিখলেন: লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন ট্রাম্পের

দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!

গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!

কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক

সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু

সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন

অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ

অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা

কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার

হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার

খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি

কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু

মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু

প্রণব মুখার্জি আর নেই
