
জালাল উদ্দিন আহমেদ
গিরিশৃঙ্গের নীচেই গিরিখাদ
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ মে,শুক্রবার,২০২৫ | আপডেট: ০২:৩৩ পিএম, ১৭ মে,শনিবার,২০২৫

স্পর্শকাতর এই বিষয়টি সমন্ধে ছোটবেলা থেকেই আমাদের কমবেশী ধারনা আছে। তবে এই আলোচনার একটা আলাদা উচ্চতা রয়েছে। বড়সড় উত্থান পতন না হলে এসব নিয়ে কলম ধরা মোটেই সমীচিন নয়। সেই প্রাচীনকালের সম্রাট অশোকের কথায় ধরুন না কেন। কি প্রতাপ নিয়ে লৌহযুগের সেই মৌর্য শাসক বৃহত্তর ভারত রাষ্ট্রের রাজাধিপতি হয়েছিলেন। প্রবল প্রতাপ নিয়ে ভারত রাষ্ট্রকে বৃহত্তর ভারতবর্ষে রূপান্তর করেছিলেন তিনি। তার শৌর্য বীর্য একসময় হিমালয়ের গিরিশৃঙ্গেও কাঁপন ধরিয়েছিল। যুদ্ধ বিগ্রহে ক্লান্ত সম্রাট সময় ও স্রোতের বহমানতায় একসময় ইহজাগতিক দম্ভ ও অসিশক্তির মোহ পরিত্যাগ করে মানবতা ও বিশ্বশান্তির পথকে বেছে নিয়ে নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা নেন। অবশ্য তার এই সাম্য ও শান্তির পথে আসাটাও ছিল এক বজ্রপাতের ন্যায় আচমকা আঘাত। মহাবিক্রমশালী সম্রাট, যার উদ্যত অসির ঝংকারে বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল পান করতো সেই ভারত সম্রাটের হঠাৎ করে শান্তি ও সম্প্রীতির সন্যাসী হয়ে সাধারন জীবনে কুটিরবাসী হওয়াটা বিস্ময়কর বটে। তবে লুম্বিনীর রাজকুমারের ব্রতে মোহিষ্ট হয়ে তিনি যখন ত্রিচিবর গ্রহন করে অহিংস হলেন তখন মোর্য বংশের আকাশ্চুম্বি পাখা মেলার দৃশ্যপটে হিন্দু ব্রাহ্মন্য ঠাকুরদের দ্বারা দ্রাবিড়ীয় ক্ষত্রিয় ঘোড়ায় লাগানো জিনের লাগামটা কোথাও যেন আলগা হয়ে গিয়েছিল। নক্ষত্র পতন হলো এবং প্রবল প্রতাপশালী মৌর্য সাম্রাজ্য অচিরেই ভারতবর্ষের বুক থেকে হারিয়ে গেল।
সৃষ্টির আদিকাল হতে এরকম উত্থান পতনের বহু গল্প কাহিনী আমরা পড়েছি, জেনেছি। কিন্তু নিজ কাদামাটির এই দুখিনী বাংলার হেঁসেলে যে উত্থান পতনের চাক্ষুস রোজনামচা আমাদেরকে আরও একটু কাঙাল বানালো তার ব্যাথা ভুলি কেমনে। বেশতো ছিলাম। পরের ঘাড়ে পোদ্দারি করে চলতাম। কখনো মুঘল কখনো পাঠান, আর্য অনার্যের শাহ সৈয়দ খাঁ কিংবা সাদা চামড়ার নীল রক্তের ওরা! অবশেষে ধর্মের কৃপায় পুর্ব-পশ্চিম মিলে পাক সর জমিন। ভালই তো ছিল সেসব। ওদের ঘাড়ে চড়ে কয়েক শতকের নাবালকি বালক হয়ে আমাদের দিনমান কতটুকু ভাল ছিল তা আমি জানিনা। তবে বালক হয়ে মাথা চাড়া দেয়া বাঙালী কতটুকু দুধেভাতে আছে তা আমরা স্বচক্ষেই দেখতে পাচ্ছি। প্রশ্ন উঠবে - নাবালক হয়ে থাকা বালক কেমন ছিল তা না জানার হেতু কি! উত্তর তো সোজা। তখন তো সেই আমি এই আমি ছিলাম না। একসময় রাজা মহা রাজার পরিচয়ে আমি ভারতীয় ছিলাম। তাদের সীলমোহরে আমার পরিচিতি সজ্ঞায়িত হোত। যখন নিজের পরিচয়ে ঘাড় সোজা করতে চাইলাম তখন কত না রক্ত ঝরলো, তার হিসাব কেউ কি রেখেছে! সেসব নিয়েই তো বেচাকেনার ধুম। মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধা, এসব নিয়ে কতইনা রচনা লেখা হোল বা এখনো হচ্ছে। অপরিপক্ক ও প্রতিহিংসার রাজনীতি আজ বাঙালীকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে। নিয়তির কষাঘাতে হাবুডুবু খেয়ে বাঙালী তার আপন স্বত্ত্বায় আজ হাড্ডিসার কঙ্কালসম এক জাতিস্বত্ত্বা হয়ে পৃথিবীর বুকে খাবি খাচ্ছে।
একটি জাতি এমনি এমনি তো আর শিরোনামে আসেনা। তার জন্য অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে তাকে এগোতে হয়। হয়েছিলও তাই। এক হ্যালির ধুমকেতু আমাদের রক্ত মাংসে বারুদের চকমকি ঘষে দিল। আমরা আত্মশ্লাঘায় উন্মত্ত হলাম। হাজার বছরের সেরা সন্তান হয়ে তিনি বাঙালীর মণিকোঠায় ধ্রুবতারার ন্যায় স্থির হলেন। বাঙালী জীবন-প্রাণ উজাড় করে সেই হেমিলিয়নের বাঁশির সুরে এক্তে দাইতে বেহেজিল হোল। হিমালয়ের গিরি শৃঙ্গে উঠে তিনি আমাদের স্বপ্ন সারথি হলেন। এভাবেই একটি জাতির স্থপতি হয়ে শুধু বাঙালীর নয়, তৎসময়ের তৃতীয় বিশ্বে তিনি সম্মানিত হলেন - হলেন বিশ্ব শান্তির প্রতীক। বাঙালী তার লক্ষ প্রানের বিনিময়ে সাম্য, ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদায় অবগাহন করার উদগ্র বাসনায় একনেতা, একদেশ ও এক জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঘর বাঁধতে চাইলো। মাথা উঁচু করে গাইলো, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি। ভালবাসার সবটুকু নিংড়িয়ে বাঙালী তার নেতাকে জাতির পিতার আসনে বসালো। হিমালয়ের সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গে বসিয়ে বাংলাদেশী হওয়ার উচ্চাকাঙ্খায় বাঙালী নিজের জাতিস্বত্ত্বার সাম্য, ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদায় লালিত মুক্তিযুদ্ধ সনদের চাবি নেতার হাতে ধরিয়ে দিল। কিন্তু উচ্চাকাঙ্খী অনুচরদের (যারা নিজেদের মুজিব বাদী পরিচয়ে ধন্য হতে চেয়েছিলেন) ইচ্ছার প্রতিফলনে বাংলাদেশের রচিত সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র, বাঙালী জাতীয়তাবাদের কথাগুলি সংযুক্ত করা হোল। বাঙালী এতেই সন্তুষ্ট হয়ে এগোতে চাইলো।
যাকে সামনে রেখে বাঙালী তার সাম্য, ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদার ন্যুনতম চাহিদায় গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদের মশাল জ্বালাতে চেয়েছিল তা কি তারা পেরেছিলো! যে মানুষটি (শেখ মুজিবর রহমান) তার কৈশর ও যৌবনের প্রতিটি ক্ষন পাড়া মহল্লা শহর গ্রাম চষে সমগ্র জনপদকে বাঙালী স্বত্ত্বায় গুলিয়ে নিয়েছিলেন, স্বাধীন স্বত্ত্বায় ক্ষমতার শিরোমনি হয়ে তিনি কি সেসবের মর্যাদা রক্ষা করতে পেরেছিলেন? একটি জাতির পিতার আসনে সম্মানিত হয়ে তিনি কি সেই উচ্চতায় নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছিলেন! বাঙালী তথা বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে দেখলো পিতার সর্বোচ্চ সম্মান তাকে তার ক্ষমতা লিপ্সুতার প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির মোহ থেকে বিরত করতে পারেনি। অবশেষে সবকিছুর স্বাদ আস্বাদনেও যখন তার পরিতৃপ্তি এলো না তখন তিনি বাংলাদেশ নামক স্বাধীন স্বত্ত্বার বুকে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিলেন। বাঙালীর গণতন্ত্র জাতীয়তাবাদ তথা ন্যায় বিচার ও সামাজিক মূল্যবোধের শেষ প্রদীপটিও নিভে গেল। হিমালয় গিরির এভারেস্ট শৃঙ্গে তার জন্য পেতে রাখা সেই আসনটির আর কি কোন মূল্য থাকলো? একদেশ- একজাতি- একনেতা- একদলের- ঘোষনার স্বৈরশক্তি বলে তিনি স্বঘোষিত ‘অমোচনীয় রাষ্ট্রপতি’ হিসাবে পরিবার পরিজন ও খয়েরখাঁ বেষ্টিত হলেন। সেদিন বাঙালী অবাক বিস্ময়ে তিন'শ বছর আগেকার নবাব সুলতানদের দুঃস্বপ্ন দেখে আঁতকে উঠেছিল হয়তোবা। নইলে পঁচাত্তরের এত বড় ভয়াবহতম নৃশংসতা শেষে একটি বাঙালীকেও উফ আহঃ করতে দেখা গেল না কেন! তবে ক্ষমতার আস্বাদনে লেপ্টে থাকা মানুষজন ছাড়া সেদিনের সেই শোকাবহ দিনটিতে তামাম বাঙালীকুল যে কালা বোবা হয়ে গিয়েছিল এটা হলফ করেই বলা যায়।
Lord Tenson রচিত The Echoing Green এর সেই Rhine river এর ন্যায় সমস্বরে সদ্য প্রসূত বাংলাদেশও বলার চেষ্টা করে for men may come and men may go but I go on for ever. কালের বহমানতায় বাংলার রাজনীতিতে পিতৃ ঋনের হিসাব চুকাতে কন্যা শেক হাসিনার আগমন ঘটে। কিন্তু রক্ত পরম্পরার আমোঘ ঘুর্ণাবর্তে history repeats it self এর ছাঁচে বাংলা আবারো এক কাল অধ্যায়ের গহ্বরে ডিগবাজি খাওয়া শুরু করলো। অথচ নেতা ও পিতার ঋণ শোধ করার অদম্য বাসনায় বাঙালী তারই রক্তের বেঁচে থাকা অবশিষ্ট উত্তরসুরীকে দেশের রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার ভার দিয়ে দায়মুক্ত হতে চেয়েছিল। একবার দু'বার নয়, তৃতীয় ও চতুর্থবারের মত তাকে ক্ষমতায় বসিয়ে (অবশ্য ‘ক্ষমতায় বসিয়েছিল’ শব্দ ক'টি না বলে ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ধরে রাখা হয়েছিল’ শব্দ চয়নটাই এখানে যুতসই হবে) বাঙালী যেন মহা ফ্যাসাদে পড়ে গেল। রক্ত প্রবাহের সেই ক্ষমতা ভোগ ও আঁকড়ে রাখার পরম্পরায় মেয়েটিও যেন এবার তার এক নায়কতান্ত্রিক পিতৃ আচরনে বেপরোয়া হয়ে উঠলো। ক্ষমতা মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে রাখার কুটকৌশলে হেন অপকর্ম নেই যা তিনি রাষ্ট্রীয় মেকানিজমের মাধ্যমে ব্যবহার করেন নি। অথচ কপাল পোড়া বাঙালী তাদের সর্বোচ্চ সম্মানের ডালি নিয়ে তাকে জাতির পিতার কন্যা হিসাবে দেশরত্ন, মানবতার মা ইত্যাদি অভিধায় সম্মানিত করে তৃপ্ত হতে চেয়েছে। নির্বংশ হওয়া এতিম মেয়েটিকে নিয়ে তারা বাঙালীয়ানার জোশে বাংলাদেশী হয়ে বাধার বিন্ধাচল অতিক্রমের স্বপ্ন দেখেছে। কিন্তু কিসের কি! রাজনীতিকে যিনি পিতৃ পরম্পরার অধিকার এবং ক্ষমতায় বসে দেশ শাসন করা পিতার ওয়ারিশি সম্পত্তি ভোগের বিবেচনায় নেন, তিনি কোন আঙ্গিকে দেশের সাধারন জনমানুষের আপনজন হতে পারেন সেটা ভাবতেই অবাক লাগে। সত্যি কথা বলতে কি, এক্ষেত্রেও বাংলার জনগন পিতার মত কন্যাকেও একান্ত আপনজন ভেবে তাদের সর্বোচ্চ ভালবাসার মনিকোঠায় সাজিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ঐযে স্যার আইজক নিউটনের every action has equal and opposite reaction সূত্র ধরেই বাঙালী একসময় গুমরে বলে উঠে, ‘বাছাধন গিরিশৃঙ্গের নীচে কিন্তু গিরিখাদও রয়েছে। পা হড়কে গেলে ঐ খাদই হবে তোমার অন্তিম ঠিকানা’।
প্রার্থনাঃ মহান স্রষ্ঠা, স্বাধীন বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশী জাতীয়বাদে’র উন্নত শিরকে সমুন্নত রাখুন। আ'মীন!

ভারতের আরও একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান

গিরিশৃঙ্গের নীচেই গিরিখাদ

২ উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ ৪ জনকে দুদকে তলব

হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ৬০০, পুলিশ তদন্ত শেষ হয়নি একটিও

মোদি অবশ্যই প্রতিশোধ নেবে, দেশকে সজাগ থাকার আহ্বান: ইমরান খান

আ.লীগের খবর প্রকাশ করলে দুই থেকে সাত বছর শাস্তি

পাকিস্তানের আকাশজয়ী বাজপাখি নারী পাইলট আয়েশা

করমুক্ত আয়সীমা বেড়ে হতে পারে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা

আন্দালিব রহমান পার্থের স্ত্রীকে বিদেশ যাত্রায় বাধা

মমতাজ সংগীতশিল্পী থেকে যেভাবে হয়ে উঠলেন ফ্যাসিস্টের দোসর

শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

সাবেক এমপি সংগীতশিল্পী মমতাজ গ্রেফতার

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: ইসি

হাসিনার ভুলেই সব শেষ

শেওড়াপাড়ায় ২ বোন খুন: মাস্ক-ক্যাপ পরা সেই ব্যক্তি গ্রেফতার

দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!

গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!

কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক

সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু

সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন

অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ

অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা

কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার

হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার

খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি

কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু

মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু

হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
