'আমারে প্রায় খাইয়া ফেলছিল' 

মানিকগঞ্জে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপাতি ও নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, মাত্র ২৭ ভোটে বিজয় পেয়েছি। আমারে প্রায় খাইয়া ফেলছিল। তিনি মনে করেন দলের মধ্যে অনৈক্য ও মতভেদ থাকার কারনে একজন অপরিচিত ব্যাক্তির সাথে নির্বাচন করে মাত্র ২৭ ভোটে বিজয় লাভ করতে হয়। সেজন্য এই বিজয় দলের সকলকে তিনি উৎসর্গ করেন।

এই বক্তব্যের সময় নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সালাম এর সাথে বাগবিদন্ডা ঘটনা ঘটেছ। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে জেলা আওয়ামীলীগের অফিসে এই ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান বক্তব্যে বলেন, আগামী জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার প্রয়োজন বলে তিনি মনে করছেন।

গোলাম মহীউদ্দীন নির্বাচনের ফলাফলের ২৭ ভোটে বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'ছোট্টো হলেও আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। ক্ষীন হলেও আমাদের অনৈক্য আছে'। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী একে এম বজলুল হককে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সদস্য নয়। তাঁর কোন অফিস ছিলনা, মিছিল করেনি, মিটিং করেনি, কাওকে খাইতে দেয়নাই। ওরপক্ষে বিএনপি, জাতিয় পাটি, জাসদ মাঠে নামে নাই। কোন শক্তিবলে ও আমারে খাইয়া ফেলছিল প্রায়।

উপস্থিত নেতৃবৃন্দদের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমারে খাইয়া ফেলা মানে এদের খাইয়া ফেলা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খাইয়া ফেলা। এরপরপরই তিনি বলেন, ছোট হলেও আমাদের মধ্যে অনৈক্য আছে। ক্ষীন হলেও আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। আগামী ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন এই অনৈক্য নিয়ে কি ভাবে দল সফল হবে।

বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করার প্রয়োজনিয়তার কথা বলেন তিনি। এই পর্যায়ে তিনি বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের পরিসংখ্যান দিতে থাকেন। এ সময় তাঁর পাশে বসা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম পরিসংখ্যান বলতে নিষেধ করলে দুজনের মধ্যে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। তবে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রসঙ্গত, এবারের মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন ভোট পান ৪৫২টি। সতন্ত্র প্রার্থী এ,কে.এম বজলুল হক পান ৪২৫টি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পদাধীকারী নেতা গোলাম মহিউদ্দিনের অভিযোগকে সঠিক বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নেতা কাজ করেছে।

এদের মধ্যে সিংগাইর, সাটুরিয়া, হরিরামপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের কয়েক শীর্ষনেতা ও জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেক করেন তাঁরা। সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে টাকা পয়সা দিয়ে ভোট কেনায় সহযোগীতাও করেছেন বলে তারা অভিযোগ করেন।

দলের সভাপতির বক্তব্য নিয়ে ভিন্নমতও প্রকাশ করেছেন নেতারা। তাদের ভাষ্য, বিষয়টি প্রকাশ্যে সভায় এ নিয়ে আলোচনা করা ঠিক হয়নি। দলীয় ফোরামে আলোচনা করা উচিৎ ছিল।