avertisements 2

আপাতত মায়ের কাছেই থাকবে জাপান থেকে আসা দুই শিশু

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:১৮ পিএম, ১৭ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

অভিভাবকত্ব নিয়ে ঢাকার পারিবারিক আদালতের মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু আপাতত মা এরিকো নাকানোর কাছেই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে এ দুই শিশুকে আদালতের এখতিয়ারের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। আর শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ সন্তানের সঙ্গে সাক্ষাত ও সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।

আজ রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

তবে এ আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত ও পারিবারিক আদালতকে শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের করা মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

২০০৮ সালে প্রকৌশলী ইমরানকে বিয়ে করে জাপানে থাকা চিকিৎসক নাকানো এরিকো দাম্পত্য কলহের জেরে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান। মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী।

তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলে বিচারক। কিন্তু এই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক দফা শুনানির পর হাইকোর্ট বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন।

গত বছর ২১ নভেম্বর দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, এ রিটটি চলবে (কন্টিনিউয়াস মেন্ডামাস)। দুই মেয়ে পাঁচ নম্বর বিবাদী (বাবা ইমরান শরীফ) হেফাজতে থাকবে। মা দেখা-সাক্ষাৎ এবং একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন। যেহেতু মা জাপানি নাগরিক এবং সেখানে বসবাস ও কর্মরত আছেন—এ কারণে তিনি তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন সময় কাটাতে পারবেন।

তাতে আরো বলা হয়েছি, এ ক্ষেত্রে বছরে তিনবার বাংলাদেশে যাওয়া-আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের সব ধরনের খরচ পাঁচ নম্বর বিবাদীকে (ইমরান শরীফ) বহন করতে হবে। এর বাইরে যাওয়া-আসার খরচ দরখাস্তকারী (মা) বহন করবেন। ছুটির দিনে অন্তত দুইবার শিশুদের সঙ্গে ভিডিও কলে মাকে কথা বলিয়ে দেবেন ইমরান শরীফ। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত খরচ বাবদ আগামী সাত দিনের পাঁচ নম্বর বিবাদী দরখাস্তকারীকে ১০ লাখ টাকা দেবেন।

রায়ে আরও বলা হয়, রিটটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদেশ প্রতিপালিত না হলে বা অন্য কোনো আদেশের জন্য আদালতে পক্ষগুলো আসতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখবেন। তাকে প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে।

আর জাপানে থাকা ছোট মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন শিশুদের মা এরিকো নাকানো। সে আবেদনের শুনানির পর গত ১৫ ডিসেম্বর এক আদেশে দুই শিশুকে প্রথমে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মা নাকানো এরিকোর কাছে রাখার সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। পরে শিশুদের মায়ের কাছে রাখার মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। আদালত বলেন দেন, শিশুদের বাবা বাংলাদেশি ইমরান শরীফ আদালতের ঠিক করে দেওয়া সময়ের মধ্যে (সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে) শিশুদের সাথে দেখা করতে পারবেন, সময় কাটাতে পারবেন।

আর এরিকো নাকানোকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভটু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলে দেন সর্বোচ্চ আদালত। পরে হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি পেয়ে লিভটু আপিল করেন এরিকো নাকানো। সেটি নিস্পত্তি করেই রায় দিলেন আপিল বিভাগ।

আদালতে শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। শিশুদের মায়ের পক্ষে শুনানিস করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

শিশুদের নিয়ে মা এরিকো নাকানো কোথায় থাকবেন, রায় দেওয়ার সময় ফিদা এম কামাল এ প্রশ্ন তুললে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ সিদ্ধান্ত মা নিবেন। এটা আদালতের দেখার বিষয় না।

উৎসঃ   kalerkantho

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2