avertisements 2

ওরা নুরুলদিন

অজল জালাল
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ আগস্ট,রবিবার,২০২৫ | আপডেট: ১০:২৮ এএম, ৩ আগস্ট,রবিবার,২০২৫

Text

তোমরা কি কেউ নুরুলদিনকে দেখসো!

চেননি কি ওই গেঁয়ো চাষা মানুষটিরে

কোন এক বর্ষাত্যা দুপুরে ভাওয়াইয়া গানে

দরাজ কন্ঠে, ওকি গাড়িয়াল ভাইইইইই।

মই দেয়া কাদা-পানির ক্ষেতে নিবিষ্ট চিত্তে 

মুঠোভর্তি ধানের বিচুলি হাতে, জট

ছাড়িয়ে একটা দুটো করে টপাটপ 

লাইন ধরে ধান পুঁতার দৃশ্য।

আবহমান বাংলার “সেকি অপরূপ 

রূপে মা আমার এই না পল্লী জননী”।


‘নুরুলদিনের সারাজীবন’,সৈয়দ হকের পদ্য

এইতো সেদিন, বাংলা ১১৮৯ এর কথা।

নুরুলদিনদের আজ বড়ই প্রয়োজন 

বাংলার এঁটো মেঠো ঘাটের প্রান্তরে।

নুরুলদিনরা এখন পিচঢালা রাজপথে 

কেতা দুরস্ত ড্রাইভার,ব্যাটারি রিক্সার চালক 

আরো আছে কতশত ঝাড়ুওয়ালা, ঠেলা,

সবজি, ভাঙ্গাড়ি,ফুটপাতের হকার আর

শহুরে অট্টালিকায় দারোয়ানী কাজ

নগর জীবনে ওদের বাঁচার তাগিদ। 


আষাঢ়ের হাল চাষ, জৌঁয়াল কাঁধে বলদ

পিছনে পাঁচন হাতে লাঙ্গলের মুইঠ্যা ধরে

নুরুলদিনদের হেট হেট শব্দ শুনা যায় কি!

সোনালী দিনের সেই পিতৃপুরুষের ছবি 

ঊনিশের ভরা দুপুর সুজলা সুফলা মাঠে

দক্ষ কারিগর ওরা সোনার মানুষ ছিল।

একুশে নুরুলদিনরা গ্রামছাড়া বাস্তুহারা

কড়াইল শেখেরটেক সাততলা বস্তির

নগর জীবনে - আভিজাত্যের সমন্তরাল

সিভিক লাইফে যত অবিচ্ছেদ্য নাম। 


বাংলার ছায়াঘেরা সবুজের মাঠ, 

নদীতে নৌকার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ

আর আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়ানো - 

তিস্তা যমুনায় সৃষ্ট ভাটিয়ালীর সপ্তম সুর

মাঝি বাইয়া যাওরে. কিংবা পদ্মার ঢেউরে..

আর ‘কে যাসরে ভাটি গাঙ বাইয়া আমার

ভাই ধনরে কইয়ো নাইওর নিত বইলা’ 

শচীন কর্তার সেই আবেগী গলার আবাহন। 

আজ নেই কোন হাঁকডাক শুন্য হাহাকার

নুরুলদিন ফিরবে কি তার আপন বৈভবে! 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2