avertisements 2
Text

রাশেদুল ইসলাম

লক্ষ্যহীন জীবন

প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৫

Text

মানুষের জীবনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকলে সে জীবন নিয়মানুগ ও সুশৃঙ্খল হয় ।  যার জীবনের কোন  লক্ষ্য নেই,  সে অপ্রত্যাশিত ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে । অনেক বছর আগের একটা উদাহরণ এখানে দেওয়া যেতে পারে । তখন সরকার একটি নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দেশের প্রতিটি জেলায় একটি নতুন পদ সৃষ্টি করে । নতুন পদ পূরণের জন্য যাঁদের নিয়োগ প্রদান করা হয়, তাঁদের কোন ধরণের  প্রশিক্ষন ছাড়াই  জেলা পর্যায়ে পদায়ন করা হয় । নতুন পদে যোগদান করেই প্রত্যেক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ খাতের বাজেট পেয়ে যান । একজন মহিলা কর্মকর্তা প্রাপ্ত অর্থের অর্ধেক তাঁর মায়ের নামে পাঠিয়ে দেন । টাকা পাঠানোর কথা একটি চিঠি লিখে তিনি মাকে  জানিয়ে দেন । মা খুশি হয়েই সেই চিঠি অনেককে পড়ে শোনান । চিঠির ভাষা এমন ছিল যে, তা সবার কাছে একটি মুখরোচক আলোচনায় পরিণত হয় । সেই কর্মকর্তা তাঁর মাকে যা লিখেন  তার সারকথা এই যে, তিনি যে চাকরি পেয়েছেন  তাতে প্রশিক্ষন বাজেটের অর্ধেক খরচ হবে এবং বাকিটা নিজের  থেকে যাবে  । এভাবে ভবিষ্যতে তিনি আরও টাকা পাঠাতে পারবেন । খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  তাঁর একজন  সহকর্মী  তাঁকে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন । একজন চাকুরীজীবীর কর্মজীবনের যদি কোন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকে,  তাহলে যে অফিসে তিনি যোগদান করেন,  সেখানে সকলে যদি অসৎ হন, তাহলে তিনি ভাবতে পারেন অসৎ হওয়াটাই তাঁর  চাকুরী । 

তবে সবকিছুর ভালো এবং মন্দ দুটি দিকই আছে । একটি পরাধীন দেশের শাসনকাজ পরিচালনায়  লক্ষ্যহীন কর্মকর্তা অত্যাবশ্যক ।  বিষয়টি ইংরেজ জাতি ভালো জানতেন । তাই, তাঁরা ইষ্ট ইডিয়া কোম্পানির রাইটার বা প্রশাসক  ছাত্র অবস্থায় নির্বাচন করে লন্ডনের ইষ্ট ইডিয়া কোম্পানি কলেজে ভর্তি করতেন । সেখান থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচন চূড়ান্ত করে ভারতে পাঠাতেন । নব নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য পরবর্তীতে কোলকাতায়  ফোর্ট উইলিউয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় । তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতে ইংরেজ শাসন ও শোষণ দীর্ঘস্থায়ী করা । লক্ষ্যহীন কর্মকর্তাদের মাথায় এ ধরণের লক্ষ্য  ঢুকিয়ে দেওয়া সহজ । ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইংরেজ তাঁদের লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে সে সময় শতভাগ সফল ছিল  । 

দুঃখজনক সত্যে এই যে, আমরা ইংরেজদের অনেক খারাপ অভ্যাস রপ্ত করেছি; কিন্তু তাঁদের উল্লেখযোগ্য ভালো কোন  গুণ আয়ত্ত্ব করতে পারিনি । যেমন ইংরেজদের একটি বড়  গুণ, তাঁরা আইন মান্যকারি জাতি । A law abiding nation. নীল চাষিদের প্রতি ইংরেজদের যে, নির্যাতনের কাহিনি আমাদের জানা, সেই নির্যাতনও করা হয়েছে একটা আইনের আওতায় । আইনটির নাম The Bengal Indigo Contracts Act, 1836. সে আইন বাতিল হয়েছে বহু আগে ।  ইংরেজ প্রবর্তিত যে সকল আইন এখনও অনুসরণ করা হয়, সেগুলো যথাযথ অনুসরণ করা হলেও যে কেউ ইচ্ছামত অসৎ হওয়ার  সুযোগ পেতেন না  । কিন্তু বাস্তবতা হল আমরা আইন মান্য করতে অভ্যস্থ নই । আমাদের যারা ক্ষমতাবান তাঁদের অনেকেই মনে করেন আইন মান্য করা অসম্মানের  কাজ ।

আমি বলছিলাম জীবনের লক্ষ্যের কথা । প্রশ্ন হতে পারে,  একজন মানুষ কিসের ভিত্তিতে তার  জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করবে ? 

এ প্রশ্নের সহজ উত্তর,  এ বিষয়ে প্রচলিত  ধর্ম বা নীতিবাক্য অনুসরণ করা যেতে পারে ।

আমাদের দেশের প্রায় সকলেই ধর্ম বিশ্বাসী ।  এ কারণে আমাদের দেশে জীবনের  লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ ধর্মের বিধান অনুসরণ করতে পারে । 

উদাহরণ হিসেবে আমি ইসলাম ধর্মের কথা বলি ।  পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, 

 

‘প্রত্যেকেরই একটি লক্ষ্য আছে; যা তার কর্মধারাকে পরিচালনা করে । অতএব তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করো’ ।

(সূরা বাকারা, আয়াত ১৪৮) । 

 

পবিত্র কোরআনের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষের একটা  লক্ষ্য থাকতে হবে এবং তা হবে সৎকর্মমুখী ।  লক্ষ্য এমন হবে যেন একজন মানুষ তা অর্জনের জন্য আমৃত্যু কাজ করতে পারে । বিয়ের জন্য পাত্র নির্বাচন বা  ভবিষ্যৎ  কোন পেশা  নির্বাচন করা   কারো জীবনের লক্ষ্য হওয়া সমীচীন নয় । 

 

পবিত্র কোরআনের মর্ম অনুযায়ী মানুষের মূল লক্ষ্য হবে সৃষ্টির সেবা করা । এই সেবা একজন ডাক্তার হয়েও যেমন করতে পারেন; একজন বৈমানিক হয়েও তা  করতে পারেন । একজন বৈমানিক সল্পতম সময়ে একজন মানুষকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে থাকেন । এটি অনেক বড় সেবার কাজ । বৈমানিক হওয়ার জন্য একজন মানুষকে তার মেধা ও শ্রম দিতে হয় । আল্লাহ্‌ প্রদত্ত গুণের  সর্বাত্মক ব্যবহারও এক ধরণের ইবাদত । 

আমি বিনীতভাবে জানাই যে,  ইসলাম ধর্ম বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া বা আলোচনা করার যোগ্য ব্যক্তি  আমি নই । এ কাজ করবেন আমাদের মসজিদের ইমাম ও আলেমগণ । তবে  একজন পাঠক হিসেবে আমি যতটা বুঝেছি,  এখানে তার সহজ সরল  ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছি  মাত্র । 

 

আমার লেখার সারকথা এই যে, আমাদের ছেলেমেয়েদের জীবনের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকা দরকার , যে লক্ষ্য সামনে নিয়ে তারা এগিয়ে যাবে । সংশ্লিষ্ট সকলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন,  এটাই আমাদের প্রত্যাশা । 

 

শুভ কামনা সকলের জন্য । 

১ নভেম্বর, ২০২১ । ইস্কাটন, ঢাকা । 




 

বিষয়:
avertisements 2
ফের জুলাই আন্দোলনকে ব্যঙ্গ করে শাওনের পোস্ট, নেটিজেনদের ক্ষোভ
ফের জুলাই আন্দোলনকে ব্যঙ্গ করে শাওনের পোস্ট, নেটিজেনদের ক্ষোভ
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা লুক্সেমবার্গের
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা লুক্সেমবার্গের
তরুণরা সক্রিয় থাকলে কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকতে পারে না : প্রধান উপদেষ্টা
তরুণরা সক্রিয় থাকলে কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকতে পারে না : প্রধান উপদেষ্টা
ডিবি হারুনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৬ কোটি আত্মসাৎ, ব্যবসায়ীর মামলা
ডিবি হারুনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৬ কোটি আত্মসাৎ, ব্যবসায়ীর মামলা
কুবি ছাত্রী সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা: আসামির স্বীকারোক্তি
কুবি ছাত্রী সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা: আসামির স্বীকারোক্তি
ব্যারিস্টার ফুয়াদরা জানেন না কোথায় থামতে হবে : হামিম
ব্যারিস্টার ফুয়াদরা জানেন না কোথায় থামতে হবে : হামিম
আলোচিত সাদাপাথর লুটের ঘটনায় পদ হারানো সেই বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
আলোচিত সাদাপাথর লুটের ঘটনায় পদ হারানো সেই বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা: সাবেক এমপি সাইফুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা: সাবেক এমপি সাইফুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ
কাতারে হামলায় মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না: মার্কো রুবিও
কাতারে হামলায় মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না: মার্কো রুবিও
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিএনপির ‘সদিচ্ছা’ দেখতে চায় এনসিপি, আজ ফের বসবে কমিশন
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিএনপির ‘সদিচ্ছা’ দেখতে চায় এনসিপি, আজ ফের বসবে কমিশন
আমেরিকার বিশ্বাসঘাতকতার পর নতুন অংশীদার খুঁজছে কাতার
আমেরিকার বিশ্বাসঘাতকতার পর নতুন অংশীদার খুঁজছে কাতার
মেহেদী রাঙা হাতে সংসার জীবনে পা রাখা হলো না জান্নাতুল ফেরদৌসের
মেহেদী রাঙা হাতে সংসার জীবনে পা রাখা হলো না জান্নাতুল ফেরদৌসের
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরো ৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরো ৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত
লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর আ.লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার চেষ্টা
লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর আ.লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার চেষ্টা
আ. লীগের ভোট জামায়াত পেয়েছে বলা মানে দলকে আরও বিপদে ফেলা : রুমিন ফারহানা
আ. লীগের ভোট জামায়াত পেয়েছে বলা মানে দলকে আরও বিপদে ফেলা : রুমিন ফারহানা
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর  আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
প্রণব মুখার্জি আর নেই
প্রণব মুখার্জি আর নেই
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
avertisements 2
avertisements 2