avertisements 2

সহায়তা শর্তসাপেক্ষে হয় না

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:২২ এএম, ১৯ মে,রবিবার,২০২৪

Text

আফগানিস্তানের মানবিক সহায়তা খাতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে কট্টর তালেবান সরকার। এরপরও এখাতে সহায়তা প্রদান বন্ধ করবে না জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক সংস্থাটি এ কথা জানায়। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রামিজ আলাকবারভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জাতিসংঘ ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আফগানিস্তানের জনগণকে জীবন রক্ষাকারী পরিষেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এক বিবৃতিতে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটির পদক্ষেপকে ‘বেপরোয়া ও ভয়ংকর’ বলে মন্তব্য করেছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭। এরপর আলাকবারভ বলেন, আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা ‘অনেক বেশি’। জাতিসংঘের কর্মকর্তা রামিজ আলাকবারভ বলেন, ‘নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক সহায়তা প্রদান সম্ভব বলে আমরা মনে করি না।’ তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে থাকা ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।’

আলাকবারভ আরও বলেন, ‘মানবিক সহায়তা কখনো শর্তসাপেক্ষে নয়। ক্ষুধার্ত ব্যক্তি কিংবা মৃত্যুপথযাত্রীকে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দিতে আপনি শর্তারোপ করতে পারেন না।’ কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পড়াশোনায়ও নিষেধাজ্ঞা দেয় তালেবান প্রশাসন। আলাকবারভ বলেন, তালেবান শাসকদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক ও বৈশ্বিক সংস্থাটির অন্য কর্মকর্তারা আসছে সপ্তাহগুলোতে দেশটি সফর করবেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তা রামিজ আলাকবারভ বলেন, তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগের অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, একটি সমাধানে আসার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো চাপ প্রয়োগ নয়, বরং আলোচনা।

অতীতে চাপের জবাব ইতিবাচকভাবে দেয়নি গোষ্ঠীটি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করে আলাকবারভ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের কয়েক দফা ‘গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে। আলাকবারভ বলেন, নারী স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী একমত হয়েছেন যে এ বিষয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা উচিত নয় এবং নারী স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজে ফিরতে পারেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তা রামিজ আলাকবারভ আরও বলেন, ‘মানুষের মৌলিক অধিকারের বোঝাপড়াকে ভিত্তি ধরে নারীদের কাজে ফেরা আর মেয়েদের স্কুলে ফেরা নিয়ে আলোচনা চলছে। সমস্যা সমাধানের ওপরই আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’ শনিবার তালেবান সরকার আফগানিস্তানে দেশী-বিদেশী সব এনজিওতে নারীদের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশটিতে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ছয়টি এনজিও। এতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়া দিয়েছে। দুই দশকের যুদ্ধ মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করে। সে সময় তালেবান নেতারা আগের কট্টরপন্থা থেকে সরে এসে উদারনীতি গ্রহণের ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু মুখের কথা ও বাস্তবতার মধ্যে বিস্তর ফারাক।

প্রায় প্রতিটি দিনই দেশটির নারী ও মেয়েদের জন্য খারাপ খবর দিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা। নারীর স্বাধীনতা যেন খাঁচায় বন্দি।

গত মাসের শুরুর দিকে সাদাফ নামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে নৈতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি পুরুষ অভিভাবক ছাড়া এক পুরুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। শাস্তি হিসেবে তাকে দোররা মারার সিদ্ধান্ত হয়। শাস্তি কার্যকরের আগের রাতে সাদাফ পরিবারের সবার কাছে থেকে বিদায় নেন। বাবাকে বলেন, তার কিছু হলে যেন ভেঙে না পড়েন এবং এই প্রদেশ ছেড়ে যান। পরের দিন তাকে অভিযোগকারী প্রতিবেশী ব্যক্তিসহ তালেবান নেতাদের উপস্থিতিতে দোররা মারা হয়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2