avertisements 2

ফরিদপুরে গুমরে কাঁদছে শহীদ মিনারটি, শ্রদ্ধাও নেই যত্নও নেই!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৫৮ এএম, ১৪ মে,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

জঙ্গলে ঘেরা পরিত্যক্ত একটি শহীদ মিনার। যে মিনার মনে করিয়ে দেয় ভাষার কথা। ভাষার জন্য জীবন দেবার কথা। মনে করিয়ে দেয় ভাষা আন্দোলনের এক গৌরবময় ইতিহাসের কথা। যে মিনারে একসময় ভাষা শহীদদের স্মরণে চোখের জল পড়েছে তা আজ পরিত্যক্ত। জঙ্গল আজ আঁকড়ে ধরেছে। মিনারটি নিজেই আজ গুমরে কাঁদছে।

এই শহীদ মিনারটি ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজের। মিনারটি কলেজ ক্যাম্পাসের পশ্চিমের এক কোনে পরায় তাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের পূর্ব পাঁশে এর পরিবর্তে নারীদের কমনরুমের সঙ্গেই নতুন করে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে পুরাতন শহীদ মিনারটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও তার প্রতি আর কোন সম্মান বা শ্রদ্ধা কাজ করেনা কলেজ কর্তৃপক্ষের।

শুধু তাই নয় মিনারটির পাশে বাউন্ডারি সংলগ্ন প্রধান সড়কে রয়েছে একটি খাবার হোটেল। তার যত ময়লা আবর্জনা তার সবই ফেলা হয় এই মিনারের পাদদেশে। যে মিনারের পাদদেশে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো সেখানে আজ ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়।

ফরিদপুর শহরের টেপাখোলায় অবস্থিত সরকারি ইয়াছিন কলেজ। যার প্রথম প্রতিষ্ঠা ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল নামে। এ এলাকার অল্প শিক্ষিত অথচ প্রবল শিক্ষানুরাগী ইয়াছিন জমা‍দার নামক ব্যক্তিটির জমি ও অর্থ সাহায্যে যার প্রতিষ্ঠা। সে সময়ে শিক্ষা বিস্তারের খুব স্বল্প সংখ্যক মুসলমানই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মানে এগিয়ে আসতেন। তাই ইয়াছিন জমাদারের মতো স্বল্প শিক্ষিত মানুষের পক্ষে এ ধরণের প্রয়াস ছিল সত্যই অকল্পনীয়।

ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল সময়ের দাবীতে ১৯৬৮ সালে স্থানীয় জনগণ এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্যোগে ইয়াছিন কলেজে রূপান্তরীত হয়। যা ১৯৮৭ সালে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজকের সরকারি ইয়াছিন কলেজ, ফরিদপুর নামে পরিচিতি লাভ করে।

কলেজে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ৪০ জন। শিক্ষার্থীদের এইচএসসি এবং অনার্সের ৪ট বিষয়ে পাঠদান দেওয়া হয়।

১৯৯৯ সালে কলেজে শহীদ মিনারটি নির্মান করা হয়। সেখানে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো। ২০১২ সালে কলেজের অফিস কক্ষের পাশে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে আজ অবধি চোখ মেলে দেখেওনি কেউ।

কলেজের দারোয়ান মজিদ শেখ। প্রায় ৩০ বছর হল চাকরির বয়স তার। তিনি বলেন, কলেজের গেটের সামনেই শহরের বৃহত্তম গরুর হাট। প্রতি মঙ্গলবারে এ হাট মিললে অনেক গরু ব্যাপারীরা ভেতরে ঢুকে ঐ জঙ্গলে গিয়ে পায়খানা প্রসাব করে। নতুন গেটের নির্মান কাজ হচ্ছে তাই প্রবেশ পথ খোলা।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফসর শীলা রানী মন্ডল বলেন, পুরাতন শহীদ মিনারটি ছিল পুরাতন মডেলের। আর তাছাড়া পুরাতন মিনারটি সামনে তিন তলা ভবন থাকায় তা ক্যাম্পাসের এককোণে পড়ে গিয়েছে। আর সেখানে নতুন ৬ তলা ভবন পাশ হয়ে গেছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে। তবে সেটার পরিবর্তে কমন রুমের পাশে নতুন আধুনিক শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভাষা দিবসটিকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পনা আছে পুরাতন মিনারটিকে পরিষ্কার করে রং করার।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2