avertisements 2

প্রেমের ফাঁদে ফেলে বয়স্ক পুরুষের সর্বনাশ করতেন স্বামী-স্ত্রী 

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৫৮ পিএম, ৩ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

স্বামী আর স্ত্রী। দু’জন মিলে তৈরি করেছিলেন প্রতারণার সাম্রাজ্য। ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে মধ্য বয়সী মানুষকে প্রেমের ফাঁদে ফাঁসাতেন স্ত্রী নাসিমা বেগম। এরপর সেই ব্যক্তিকে বাসায় এনে আপত্তিকর অবস্থায় ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন স্বামী টুটুল ও তার আরও দুই সহযোগী। এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চক্রের চারজনকেই গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, ২০১৮ সাল থেকে তারা এমন প্রতারণায় জড়িত।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বসবাস টুটুল-নাসিমা দম্পতির। নাসিমা ফেসবুকে আইডি খুলে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেন মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের। এরপর সেই ব্যক্তির সঙ্গে মেসেঞ্জারে আলাপের পর ভিডিও কলে কথা বলতেন নাসিমা।

এরপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে আনতেন। নিজের বেডরুমে নিয়ে জড়াতেন আপত্তিকর অবস্থায়।

প্রতারণার কৌশলের বর্ণনা দিয়ে নাসিমা বলেন, মেয়ে নাকি ছেলে বোঝার জন্য ভিডিও কলে দেখতে চায়। তার কিছুদিন বলার পর সে আমাকে বলে বাসায় আসা যাবে কিনা? আমি জানাতাম বাসায় আসা যাবে। তারপর বাসায় নিয়ে আসা হতো।

এদিকে পরিকল্পনামাফিক হাজির হতেন তার স্বামী টুটুল ও আরও কয়েকজন যুবক। নিজেদের পরিচয় দিতেন পুলিশ বা সাংবাদিক হিসেবে। ধারণ করে রাখা হতো ভিডিও। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেওয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা।

ব্ল্যাকমেইল করার কৌশল বর্ণনা করে টুটুল বলেন, নিয়ে আসার পর আমরা তাকে বলতাম, এটা কি আপনি ভালো কাজ করেছেন নাকি খারাপ? আপনার বাসা কোথায়। তখন তিনি বলতেন, খারাপ কাজ হয়েছে। অন্যায় হয়েছে। তিনি স্বীকার করে আমাদের কাছে মাফ চাইতো। আমরা বলতাম, আপনি যে এই খারাপ কাজ করতে আসছেন, আপনার বাসায় এটা আমরা বলে দেব। এরপর তিনি বলতেন, আমার মানইজ্জত নষ্ট না করতে কিছু টাকা দিত এবং আমরা এটা নিতাম।

সম্প্রতি এভাবেই ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন নৌবাহিনীর সাবেক এক কর্মকর্তা। তাকে দিতে হয়েছে ৫ লাখ টাকার বেশি।

ভুক্তভোগী বলেন, তারা আমাকে বলে ১০ লাখ টাকা দিতে পারলে আমাকে সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা না করলে মিডিয়া আসবে, এলাকার লোকজন আসবে; বিশ্রি একটা অবস্থা হবে।

পুলিশ বলছে, এ চক্রের মূল টার্গেট মধ্য বয়সী পুরুষরা। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তারা ফাঁসিয়েছেন বহু মানুষকে।

গুলশান গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, আসামিরা এই কুকর্মের জন্য স্ত্রী-বোনদের ব্যবহার করেন। অন্যদিকে ভুক্তভোগীরাও পরিবার পরিজনের মূল্যবোধকে ছেড়ে দিয়ে একটা বাড়তি প্লেজারের জন্য অন্যদের কাছে খুঁজে বেড়াতে থাকে। আমরা অনুরোধ জানাব, এই ফেসবুকে, মেসেঞ্জারে দুই দিনের প্রেমে পড়ে দুই দিনের পরিচয়ে প্লেজারের অনুসন্ধানে যেতে গেলে একটা পর্যায়ে আপনাদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হতে হবে।

মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই এই চক্রগুলো প্রতারণার সুযোগ পাচ্ছে বলে মনে করে পুলিশ।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2