avertisements 2

চার হাজার টাকার জন্য হত্যা, ব্যাগের সূত্রে খুলল রহস্যের জট

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ জুন,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৩৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল,শনিবার,২০২৪

Text

ছবি: সংগৃহীত 

রাজধানীর খিলক্ষেতে ফেলে যাওয়া একটি ব্যাগের সূত্র ধরে মেছের আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় রমজান আলী নামে একজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির হাতে গ্রেফতার হলে তার থেকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানতে পারে পুলিশ।

গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৩ মে বিকালে খিলক্ষেত থানার বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে মেছের আলীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। সেই ব্যাগ থেকে লোহার কাঁচি, কম্বলসহ কিছু নতুন-পুরনো কাপড় ও মিনা নামে একজনের জন্ম নিবন্ধন ও টিকা কার্ড পাওয়া যায়।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, প্রাপ্ত ব্যাগ ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও জন্ম সনদের প্রেক্ষিতে মিনা ও তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে এই দুইজন জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগে শাহাবুদ্দিন তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে উপস্থিত হন। ওই সময় রমজান আলী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে নেত্রকোনায় যাওয়ার কথা বলে। রমজান আলী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা না করে কারওয়ান বাজার থেকে বাসে করে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। শাহাবুদ্দিন সরল বিশ্বাসে রমজানের সঙ্গে কারওয়ান বাজারে যায়। সেখানে গিয়ে রমজান শাহাবুদ্দিনকে চা পান করার কথা বলে। চা পান করার পর শাহাবুদ্দিনকে তার কাছে থাকা ব্যাগ ও টাকা তাকে দিতে বলে রমজান। শাহাবুদ্দিন চারশত টাকা ও তার ব্যাগটি রমজানের কাছে দেয়। রমজানের মোবাইল ফোন থেকে শাহাবুদ্দিন তার স্ত্রীকে জানায়, সে রমজানের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে, সেও একই এলাকায় যাবে। শাহাবুদ্দিন চা পান করার পর তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে রমজান তার ব্যাগ ও টাকা নিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত ব্যাগটি শাহাবুদ্দিনের খানো হলে সে তার ব্যাগটি শনাক্ত করে।

ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, গত ২০ মে মেছের আলী বাসা থেকে বের হলে সেই রাতে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে রমজান আলীর সঙ্গে পরিচয় হয়। অটোরিকশাযোগে রমজান ও মেছের আলী বড়ুয়া রেলগেট এলাকায় যায়। তখন রমজান আলীর পেছনে একটি ব্যাগ ঝুলানো ছিল। ওই ব্যাগের ভেতরেই শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে নেওয়া ব্যাগটি ছিল। মেছের আলীকে নিয়ে রমজান আলী রেলগেটের সামনের এক দোকানে চা পান করে। চা পান করার সময় মেছের আলীর কাছে টাকা হাজার রমজান আলী দেখতে পায়। এরপর রমজান কৌশলে মেছের আলীর চায়ের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ মেশায়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মেছের আলীর কাছে থাকা চার হাজার টাকা নেওয়াই ছিল রমজান আলীর মূল উদ্দেশ্য। মেছের আলী ও রমজান চা পান করার পর বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে যায়। কিছুক্ষণ পর মেছের আলী অজ্ঞান হলে মেছেরকে একটু দূরে বড় বড় ঘাসযুক্ত জায়গায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় রমজান। কিন্তু ভুলে ব্যাগটি রেখে যায়। ওই ব্যাগের সূত্র ধরেই অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি।

গত রোববার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল আদালতে পাঠানো হলে দোষ স্বীকার করে রমজান জবানবন্দি দেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2