avertisements 2

অভিভাবককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ, বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:২১ এএম, ১০ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে ছাত্রীদের সড়ক অবরোধদুই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে ছাত্রীদের সড়ক অবরোধ

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাসহ অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা ও আইসিটি) নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

দুই ছাত্রীর মাকে অপদস্থ করার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের সামনে দুদফা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। জেলা প্রশাসক ছাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিলে ছাত্রীরা ঘরে ফিরে যান। 

শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়াকে কেন্দ্র করে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের সঙ্গে সহপাঠী জজের মেয়ের ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট নিয়ে এ ঘটনার সূচনা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, সব শিক্ষার্থীর পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের মেয়ে কখনই শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।

সোমবার রাতে ফেসবুকে সহপাঠীদের কটাক্ষ করে একটি পোস্ট লেখে বিচারকের মেয়ে। এতে কয়েকজন সহপাঠী প্রতিবাদ জানায়।

মেয়ের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে বিচারক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার ওই ছাত্রীদের অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। প্রধান শিক্ষিকার ডাকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চার ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে আসেন। ওই সময় সেখানে থাকা বিচারক মেয়ের সহপাঠী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেন। এছাড়া তিনি দুই অভিভাবককে তার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

খবরটি জানার পর প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা বিকাল ৩টার দিকে ক্লাস বর্জন করে স্কুলের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। দু দফায় রাত ৮ট পর্যন্ত অবরোধ চলে। 

ঘটনাস্থলে এসে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘হাইকোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় ঘটনাটি জেনেছেন। বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 
এ ছাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বা অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। নিয়মানুসারে সোমবার বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। সে প্রথমে অস্বীকৃতি জানালেও পরে কাজটি করে। এ সময় অন্যরা তাকে কটূক্তি করলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়। তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। অভিভাবকরা ভয় পেয়ে জজের পা ধরে ক্ষমা চান। এ কাজে তাদের কেউ বাধ্য করেননি। আর অভিভাবকদের ক্ষমা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রীরা সড়ক অবরোধ করে।’

এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2