
জালাল উদ্দিন আহমেদ
পঁচা শামুকে পা কাটা
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:৩৪ এএম, ৪ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৫

প্রায় অর্ধ শতাব্দী কাল ধরে ছায়া হয়ে সঙ্গে থাকা সহধর্মিনী বলছিলেন, তোমার কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। এদের ব্যাপারে মাথা ঘামিয়ে লাভ কি? জানো না এরা কি জিনিস। এদের দাপট, এদের হাত কত লম্বা। এরা রামকে শ্যাম আর শ্যামকে রাম বানাতে বেশী সময় নেয় না। সুতরাং এই বয়সে ওদেরকে নিয়ে ঘাটাঘাঁটি করার দরকার নেই। সময় খারাপ, কোনদিকে কি হয়, এসব লেখালেখি ছাড়ো। আল্লাহ রসুলের নাম নিয়ে ব্যস্ত হও, কাজে দিবে। তার এই এক নিঃশ্বাসের কথাগুলো শুনে বিরক্ত হইনি তবে বিস্মিত হয়েছি। এইতো কিছুদিন আগে এক বৈকালিক চায়ের আড্ডায় সংবাদ ও সাংবাদিকদের নিয়ে তার কাছে রসাত্মক কথাবার্তা শুনেছিলাম। তখন বুঝেছিলাম টিভি না দেখা বা বাসায় রাখা পত্রিকা না পড়লেও তিনি নিয়ম করে তার হাতে রাখা স্মার্ট ফোনের গুগল এবং সংবাদ ভিত্তিক ইউটিউবের কন্টেন্টগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করেন ঠিকই। যাহোক, শান্ত গলায় তাকে শুধু বললাম, দেখ আমি তো পলিসি বা আইন আদালত নিয়ে লিখছি না। সাদামাটা সাধারন মানুষের চোখে দেখা কথাগুলিই কালির আচড়ে তুলি ধরছি মাত্র। তাছাড়া এখন তো তোমার ঐ মহারানী ক্লিওপেট্রা নেই যে হঠাৎ করে দরজায় কটা নড়ে উঠবে।
সত্যিকার অর্থেই জাতি হিসাবে আমরা বড় উদার এবং দুর্ভাগাও বলা যেতে পারে। এই উদারতা এবং দুর্ভাগ্য যেন পাশাপাশি জমজ ভাইয়ের মত অবস্থান করছে। নইলে বার বার ঠকছি কিন্তু পচা শামুকে পা কাটার ভয় থাকলেও সেই পচা শামুকেই বারংবার পা ফেলছি আমরা। অতি উদারতার খেসারত দিতেই আমাদের এই দুর্দশা। নইলে বার বার গণতন্ত্রের টুটি চিপে ধরা স্বৈর শাসনের আবির্ভাব, এসব থেকে মুক্ত হতে মৃত্যুর মিছিল, দেশের সূর্য সন্তানদের অপঘাতে মৃত্যু আর কত! দেশে গণতন্ত্র ও জনগনের সরকার ফিরিয়ে আনতে বার বার ছাত্র জনতার রাজপথে আন্দোলন ও সহিংস রক্তপাতের পুনরাবৃত্তি কেন করতে হচ্ছে! এর জবাব কে দেবে! দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ও সেগুলোকে পরিপুষ্ট করে গড়ে তোলার জন্য মানবিক মুল্যবোধের বুদ্ধিবৃত্তির আনুশীলন কি এদেশে আছে! রাজনীতি যারা করেন এবং তাদের নেতা ও কর্মীরা কি বিবেক, নৈতিকতা, সহমর্মিতা, মানবিক মূল্যবোধ এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের নিয়মিত অনুশীলন করেন? সুনির্দ্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শের চর্চা কি তাদের আছে? ব্যক্তিপুজা বাদ দিয়ে, ব্যক্তির করে যাওয়া কর্মের আলোক বর্তিকায় তারা কি আলোকিত হন? পাশাপাশি শিক্ষক বুদ্ধিজীবি এবং সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনের আদর্শ লালনের মানুষজন এবং পেশাজীবি শ্রেনীর দেশ গড়ার কারিগররা কি সঠিক পথে আছেন! এমনকি রাষ্ট্র মেকানিজমের কর্মীবাহিনী কি নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দেশ মাতৃকার প্রকৃত কর্মী হিসাবে জনগনের পাশে রয়েছেন! তাছাড়া দেশ গড়ার চতুর্থ স্তম্ভ বা ফোর্থ পিলার বলে বিবেচিত দেশের সংবাদ মাধ্যম কি সঠিক বিবেচনায় তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে?
শুরু করেছিলাম মিডিয়া সংক্রান্ত বিষটিকে সামনে রেখে। গল্পের ছলে হয়তো। আপনারা কেউ কি বলবেন, বর্তমানের এই মুক্ত তরঙ্গ প্রবাহের যুগে কোন্টা থুয়ে কোন্টা নিয়ে শুরু করি! এইতো সেদিন, অর্থাৎ বিগত শতাব্দীর শেষভাগে আমাদের মিডিয়া বলতে ওই সবেধন বিটিভি আর রেডিও এর তরঙ্গই ছিল শেষ ভরসা। অবশ্য উচ্চবিত্তের ঘরে ছিল ছাদে লাগানো হাই ভোল্টেজ ডিস এন্টেনা আর হাতে ছিল এক কেজি ওজনের প্রমান সাইজের পুলিশ স্টাইলের মোবাইল ফোন। আর ছাপানো পত্রিকার মালিকানা নির্দেশিত গুটিকয় একঘেয়ে পত্রিকা ও মাসিক ম্যাগাজিন। দিন বদলের মুক্ত মিডিয়ার যুগ শুরু হোল একবিংশের প্রথম প্রভাতে। দেশে প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের উত্থান ঘটলো। ক্যাবল টিভির সাধারনীকরন হোল। সাধারন মানুষের হাতে মোবাইল এল। আর এই পঁচিশ বছরে এখন আন্ডাবাচ্চা থেকে শুরু করে অশীতিপর কর্ম অক্ষম বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের হাতেও স্মার্ট ফোন আলো ছড়াচ্ছে। এর ফিরিস্তি ব্যাপক তাই শুধু এটুকু বলেই ক্ষান্ত হতে চাই যে আজকের এই একবিংশের সিকি শতাব্দীতে বাংলার ঘরে ঘরে আজ স্মার্ট ফোনের ছড়াছড়ি।
এখন আসি মোবাইল সাংবাদিকতার কথায়। একটি স্মার্ট ফোন হাতে থাকলে একজন স্কুল পড়ুয়া কিশোর থেকে শুরু করে কর্মজীবন শেষ করা অবসরের আদমও এখন সাংবাদিক হয়ে উঠছেন। হচ্ছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর। আর এসবের আরো আধুনিক ও যুগপোযোগী করার জন্য হাতের মুঠোয় রয়েছে যতসব এপস ও সার্ভিস প্রভাইডার। এতে করে মুক্ত স্বাধীন চিন্তার ডালপালায় রঙ লাগছে বটে, তবে সেক্ষেত্রে অতি সন্নাসীতে গাজন নষ্টের যে নষ্টামীর জোয়ার বইছে তাতে করে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা নির্ণয় করতে সাধারন মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এসব নিয়ে রচনা লিখতে গেলে প্রবন্ধের কলেবর বাড়তেই থাকবে। তবে যেটা এই মূহূর্তের এলার্মিং নিউজ তা হোল ইউটিউবের সংবাদ প্রবাহ এবং টকশো নামের ইচ্ছেঘুড়ির দৌড়ঝাপ। দেশে একটি রক্তস্নাত বিপ্লব হয়ে গেল। গত দেড় দশক ধরে যক্ষের কুবের হয়ে এক মাফিয়া স্বৈরশাসক পিতৃ পুজার সর্বোচ্চ প্রপাগান্ডায় দেশকে পঁচাত্তরের চতুর্থ সংশোধনী আদলের রূপান্তরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুর্বার গতিতে। কোন রাজনীতিই তাকে নড়াতে না পারলেও ওই গোকুলে বেড়ে উঠা বিরাজনীতির কৃষ্ণ রুপী দামাল ছেলেপুলেরা নিজেদের মেধার অধিকার আদায় করতে গিয়েই হিংস্র কংস রাজের গনেশ উল্টে দিল। এক্ষেত্রে কংস বধের সেই ‘দড়ি ধরে মারো টানে’র ঘন্টাটি বাজা না বাজার কারন কিন্তু ওই পঁচা শামুকের সহাবস্থান।
বিগত দেড় দশকের কংস শাসনে দেশে আইনের শাসন থেকে শুরু করে ব্যক্তির ন্যুনতম মৌলিক অধিকারের কোন বালাই ছিল না। ব্যক্তি ও পারিবারিক আবহের শাসনে দেশে এক অলিখিত রাজতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যম বা সংবাদ কর্মী বলতে আলাদা কোন স্বাধীন মুক্ত কন্ঠের আওয়াজ সেখানে উচ্চারিত হোত না বা হতে দেয়া হয়নি। তবে আজকের বাস্তবতায় সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও মুক্তকন্ঠের বাহুল্যে যেভাবে মিডিয়া জগত তাদের ইচ্ছেঘুড়িকে যাচ্ছেতাই আচরনে দেশ ও সমাজ ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে আস্থির ও অস্থিতিশীল পরিবেশের সূত্রপাত ঘটাচ্ছে, বাস্তবতার নিরিখে তা একেবারেই আযাচিত ও অযৌক্তিক। সেক্ষেত্রে মুক্ত মিডিয়ার এই বাধাহীন উড়নচন্ডী প্রবাহে বর্তমানের কতিপয় সাদা মনের মানুষ কর্তৃক গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আজ দিশাহীন অসহায়ের ন্যায় সিল সর্বস্ব শিখন্ডী ছাড়া আর কি হতে পারে! সাংবাদিকতার সুযোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী ভাল মানুষের মুখোশে যেভাবে তাদের প্রপাগান্ডার দোকান খুলে বসেছেন তা সত্যিই বাঙালীর সাধারন জনপদে আবারও এক নতুন ক্ষোভের উদ্রেক ঘটাবে বলে মনে করার যথেষ্ট কারন রয়েছে। সাংবাদিকতা ও বুদ্ধিজীবির মুখোশ পরে ওইসব লোকজন সোশ্যাল মিডিয়ার মুক্ত মঞ্চে যেভাবে নতুন করে স্বৈরাচার স্তুতির গীতবাদ্যের আসর বসিয়েছেন তা সাধারন জনপদে ক্ষোভের সঞ্চার করছে। প্রকৃতপক্ষে এসব সাধারন মানুষের বুকের মধ্যে তৈরী হওয়া স্বৈরাচার সৃষ্ট ক্ষতকে আবার নতুন করে তুষের আগুনে আঁচ তৈরীতে মদদ দিচ্ছে বলেই মনে হয়। এদেরকে চিহ্নিত করে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে বাংলা তার পুরনো গহ্বরেই আছাড় খেয়ে ছটপট করতে থাকবে। অভ্যুত্থান বিপ্লব দিয়ে দেশ বদলের কোন টোটকাই তখন আর কাজে আসবে না। বলেছিলাম পঁচা শামুকের কথা। সুতরাং পঁচা শামুক সরানো বা নির্মুল করার দেশপ্রেমিক উদ্যোগ জরুরী। মত ও পথের ভিন্নতা থাকবে - কিন্তু দেশপ্রেমের কোন ভিন্নতা থাকতে নেই। ওটা এক এবং অভিন্ন। সবার জন্যই। এটা যত তাড়াতাড়ি বোধগম্যে আসবে, বাঙালীর মুক্তির পথ ততই ত্বরান্বিত হবে।

সব রেকর্ড ভেঙে দেশের ইতিহাসে বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম

পঁচা শামুকে পা কাটা

গণধর্ষণের হুমকি: ঢাবি শিক্ষার্থী আলী হুসেন ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার

পাকিস্তানে শাকিব খানের জনপ্রিয়তা বাড়ছে

কুয়ালালামপুরে বিশেষ অভিযানে বাংলাদেশিসহ আটক ৭৭০

ইনস্টাগ্রামে ৫২ বছরের নারীর সঙ্গে ২৬ বছরের যুবকের প্রেম, অতঃপর.....

সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি কারাগারে

হাসিনাকে ৫০ শতাংশ ভোট ব্যালট বাক্সে ভরে রাখার পরামর্শ দেন জাবেদ পাটোয়ারী : মামুন

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ৮০০ ছাড়াল

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত বেড়ে ২৫০

খুলনায় রূপসা সেতুর নিচ থেকে থেকে সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার

মেরুন রঙের টি-শার্ট পরিহিত সেই ব্যক্তি পল্টন থানার ওসির গাড়িচালক

‘উনিই আমার পায়ে ৪ আগস্ট গুলি করেছে, উনাকে আমি ছাড়ব না’

ভারত সফরের পরিকল্পনা বাতিল করলেন ট্রাম্প

বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান ও দীপিকার বিরুদ্ধে মামলা

দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!

গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!

কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক

সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু

সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন

অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ

অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা

কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার

হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার

খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি

কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু

প্রণব মুখার্জি আর নেই

মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু
