avertisements 2

মুক্তার হোটেল বয় থেকে শতকোটি টাকার মালিক!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৩ পিএম, ২৭ এপ্রিল,শনিবার,২০২৪

Text

হোটেল বয় হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন মো. মুক্তার হোসেন। নামিদামি রেস্টুরেন্টে কাজ করতে করতে নিজেই এই ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। তারপর রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করে কিছুদিন পর মদের   ব্যবসা শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তার এখন ৫টি বড় মদের বারের মালিক। এসব বারে শুধু অবৈধ মদই বিক্রি করতেন না। তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অবাধে যাতায়াত করতেন বারে। ডিজে পার্টির নামে অশ্লীলতা, হৈ চৈ হতো। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে গণ্যমান্য অনেকেই বিব্রত ছিলেন। উত্তরায় কিংফিশার নামের বারে মদ বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে ডিজে পার্টি পরিচালনা করে মুক্তার শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন। দেশে- বিদেশে রয়েছে গাড়ি-বাড়ি।

ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রেও তার গাড়ি-বাড়ি আছে। সেখানে বসবাস করেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। বৃহস্পতিবার রাতে তার মদের বারে অভিযান চালানোর আগেই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এসব তথ্য পায়। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে তার বার থেকে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি উত্তরা বিভাগ। 
তবে অভিযানের আগে থেকে মুক্তার পলাতক।  গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ২০০৮ সালের দিকে রাজধানীর বারিধারায় ‘এভিনিউ’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ শুরু করেন মো. মুক্তার হোসেন। এরপর গুলশানে ‘লেক ভিউ’ রেস্টুরেন্টেও ওয়েটার হিসেবে ছিলেন। সেই মুক্তার এখন শতকোটি টাকার মালিক। উত্তরার কিংফিশার বারে প্রতিদিন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যাতায়াত ছিল। তাদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ। সংবাদ সম্মেলনে হারুন বলেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল উত্তরার একটি ভবনে গান-বাজনার নামে ছেলেমেয়েরা ডিজে পার্টি করছে। একই সঙ্গে সেখানে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ মদ। উত্তরার এমপি থেকে শুরু করে গণ্যমান্য অনেকে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন বাড়িটিতে সবসময় নৈরাজ্যকর পরিবেশ বিরাজ করে। 

এমন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার-১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ রোডে অবস্থিত একটি ভবনে অভিযান চালায় ডিবি। ওই ভবনেই ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’- নাম দিয়ে বার চালাতেন মুক্তার। রাত ৯টার দিকে ডিবি সদস্যরা সেখানে গিয়ে দেখেন ভয়াবহ অবস্থা। তিনি বলেন, প্রথমে ভবনের সাততলায় গিয়ে ডিবি’র দল দেখে অনেক ছেলেমেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখে সেখানে প্রচুর বিদেশি মদ ও বিয়ার। ডিবি’র দল ৫-৬ তলায় গিয়ে একই অবস্থা দেখতে পায়। কীভাবে এত মদ দেশে নিয়ে এসেছে এ বিষয়ে কোনো তথ্যই জানাতে পারেনি বার কর্তৃপক্ষ। কাগজপত্র দেখতে ডিবি পুলিশ বাড়িটিতে রাত ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। তারপরও তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

 পরে সেখান থেকে প্রায় ৫০০ বোতল মদ ও ছয় হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। এ সময় বার ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মুক্তার হোসেন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে।  মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। মুক্তার হোসেনের কাছে বারের কয়টি লাইসেন্স আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গতকাল যে ভবনে অভিযান চালিয়েছি, সেখানকার ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ম্যানেজার আমাদের বলেছেন, মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জসহ পাঁচটি বার চালান মুক্তার। সেগুলো একই লাইসেন্সের কি না, তা আমরা জানি না।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2