avertisements 2

নাটকীয় মোড় নিতে চলেছে মুনিয়া মৃত্যুর রহস্য

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৭ এএম, ১২ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মোসারাত জাহান মুনিয়া। মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। একদিকে মুনিয়ার ভাই এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে মুনিয়ার বোন একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন গুলশান থানায়। গুলশান থানার আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলাটি তদন্ত করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থারা। তবে এই তদন্তের ক্ষেত্রে অপরাধবিজ্ঞানী এবং আইনজ্ঞরা মনে করছেন যে, পাঁচটি তথ্যেই এই মৃত্যুর সব জট, রহস্য খুলে দিতে পারে।

১. আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড: মুনিয়া কি আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে এটি তদন্তের প্রধান উপজীব্য বিষয় হওয়া উচিত বলে মনে করছেন অপরাধবিজ্ঞানীরা। এর আগে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার যারা চেষ্টা করছেন তাদের নিশ্চয়ই অন্য কোনো মতলব রয়েছে। মুনিয়ার বোন নুসরাত মুনিয়ার মৃতদেহ পাওয়ার পরপরই আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করলেন কেন সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করছেন প্রথমে এটি নিশ্চিত হতে হবে যে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এই বিতর্কটি নতুন করে সামনে এসেছে যখন মুনিয়ার ভাই সবুজ এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মামলা করেছেন। কাজেই সবার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে মুনিয়াকে কেউ হত্যা করেনি এবং যদি মুনিয়াকে হত্যা করা হয় তাহলে পুরো বিষয়টি অন্যদিকে তদন্ত করতে হবে। আর যদি মুনিয়া আত্মহত্যা করেন তাহলে তদন্ত হবে অন্য ভাবে।

২. মাদক গ্রহণ পরীক্ষা: মুনিয়ার যে জীবনযাপনের কথা পাওয়া যাচ্ছে তাতে এটা অস্বাভাবিক নয় যে মুনিয়া মাদক গ্রহণ করতেন। তিনি আসলেই মাদক গ্রহণ করতেন কিনা এবং যে রাতে তিনি মারা গিয়েছিলেন সেই রাতে অতিরিক্ত মাদক গ্রহণের কারণে তিনি অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিলেন কিনা সেটিও তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য বিষয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে অনেকে আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়। বাংলাদেশেই প্রতিবছর ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে এবং গবেষণায় দেখা গেছে এদের ৬৫ শতাংশ মানুষই মাদকাসক্ত হয়ে আত্মহত্যা করে। আর এ কারণেই মুনিয়ার যে পোস্টমর্টেম এবং অন্যান্য রিপোর্ট প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার মাদক গ্রহণের পরীক্ষাটিও করা জরুরি বলে মনে করেন অপরাধবিজ্ঞানীরা।

৩. মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা: মুনিয়ার মৃত্যু নিয়ে যেভাবে তোলপাড় করা হচ্ছে তার পিছনে অন্য কোনো রহস্য আছে কিনা বা কেউ মুনিয়াকে ব্যবহার করে অন্য কোনো খেলা খেলার চেষ্টা করেছেন কিনা তা সহজে পাওয়া যাবে মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর ব্যাংক একাউন্টের হিসাবগুলো খতিয়ে দেখলেই। কারণ যদি এটি কোনো পরিকল্পিত ঘটনা থাকে তাহলে নিশ্চয়ই এখানে আর্থিক লেনদেন হবে এবং এই আর্থিক লেনদেনগুলোর মাধ্যমে তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানা যাবে।

৪. সিসিটিভির ফুটেজ: মুনিয়ার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে ওই বাসার সিসিটিভি ফুটেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য হতে পারে এবং সিসিটিভি ফুটেজগুলো যদি তল্লাশি করা যায়, শেষে কে এসেছে, মৃত্যুর দিন ওই বাসায় কারা এসেছে এবং মৃত্যুর আগে কারা এসেছে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে পুরো রহস্যটা আরো সহজ হবে বলে মনে করছেন অপরাধবিজ্ঞানীরা। কারণ মুনিয়াকে যদি কেউ হত্যা করে তাহলে নিশ্চই তাকে বাসায় প্রবেশ করতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ সেখানে একটি বড় উপজীব্য।

৫. মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর কল লিস্ট: এই তদন্তের সবচেয়ে দরকারি জিনিস হলো মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর টেলিফোন কল লিস্ট। এই কল লিস্ট পরীক্ষা করলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

এই পাঁচটি বিষয়ে তদন্ত করলেই মুনিয়ার মৃত্যুর মূল রহস্য বা আদৌ কোনো রহস্য আছে কিনা তা বের করা সম্ভব হবে বলে অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2