avertisements 2

এক মণ ধানের চেয়ে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি বেশি!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ মে,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০২ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২৪

Text

বোরো চাষিদের মুখে হাসি নেই। বাম্পার ফলন হচ্ছে না। বোরো ধানের ন্যায্য মূল্য নেই। ফনির আঘাতে ধান গাছ মাটিতে পড়ে যায়, দুদফা শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে। বিরুপ আবহাওয়া বিরাজ করায় তড়িঘড়ি করে ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করায় ব্যর্থ হচ্ছেন। কেন না ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকেরা কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটা মাড়াই করতে পারছেনা। যদি পাওয়া যায় তবে খরচ গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ তিনগুন।

এদিকে স্থানীয় ফড়িয়া চক্র মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনছে মন প্রতি মন ৬৫০ টাকা হতে ৬৭০ টাকা দরে। আর একজন কৃষকের ধান কাটার জন্য শ্রমিকের পিছনে খরচ হচ্ছে দৈনিক ৬৮০ টাকা। কিংবা ৪/৫ আড়ি ধান মজুরি দিয়ে ধান কাটাই কৃষককে আরও বেশী মুজরী ঘুনতে হচ্ছে। অর্থাৎ কৃষাণের মজুরি একমণ ধানের চেয়েও বেশি।

চাষীরা জানান ধান রোপণ, পরিচর্যা, সার-কৃষাণ ও ধান মাড়াইসহ ধান ঘরে তুলতে খরচ করেছে। এতে করে অধিকাংশ কৃষক দেনায় জড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন। অনেক কৃষক এখনই দেনায় জর্জরিত। রেলগেট এলাকার ধানের আড়ৎদার উজ্জল বলেন, ভাল আটাশ ধান হলে ৬৭০ টাকা মন ক্রয় করবেন আর মান খারাপ হলে ৬০০ নীচে কিনবেন বলে জানান।

সরকার নির্ধারণ করেছে, প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকা, গম ২৮ টাকা ও ধান ২৬ টাকা। এ হিসেবে ধানের মণ ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারণে এ দাম পাচ্ছে না। সরকারি চাল কে বা কারা কোথা থেকে ক্রয় করে তা সাধারণ কৃষকরা জানেন না। জানলেও ফড়িয়াদের কারণে ওই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না কৃষকরা । এক শ্রেণীর প্রভাবশালী কুচক্রীমহল প্রতিবছর ভারত থেকে নিন্মমানের পচা গম আমদানি করে রাতের আধারে খাদ্যগুদাম ভর্তি করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, তার পর বটবৃক্ষ হয়েছেন। দেখার যেন কেউ নেই দেমা খেয়ে বাঁচি কৃষক মরুক আর বাঁচুক এতে কিছু আসে যায় না।

ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলুদেব বলেন, ধানের ফলন কম দামও পাচ্ছি না। ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। লাভের মুখ দেখা নিয়ে সংশয় প্রকাাশ করে তিনি বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস শুনে তড়িঘড়ি করে ধান কেটে ঘরে তুলতে হচ্ছে। এ সুযোগে কৃষাণরা তাদের মজুরি বেশি নিচ্ছে। একজন কৃষাণের দৈনিক মজুরি ৬/৭শ টাকা। এ টাকা খরচ করে ধান ঘরে তুললেও ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

এতে করে লাভের পরিবর্তে লোকসানের বোঝা বইতে হবে বলে আশঙ্কা করছি গোদাগাড়ী উপজেলার বিজড়া মৌজার কৃষক মামুন জানান, ৮ বিঘা জমিতে ইরি রোরো ধান চাষ করতে সব খরচ মিলে ৭২ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। বর্তমান ধানের বাজার ৬৪০ থেকে ৬৭০ টাকা ফলে উৎপাদন ব্যয় উড়তে মন প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। সরকারের নিকট আকুল দাবী জানান যেন কৃষক নায্যমূল্য পান তা হলে কৃষক বেঁচে যাবেন নতুবা ধান চাষে বিমুখ হবেন। একই মন্তব্য করেন কৃষক আব্দুল মামুন, দেলসাদ।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2