avertisements 2

বোরকা পরে বাদাম বিক্রি করছেন লতা রায়!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:৩১ এএম, ১৭ মার্চ, বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:০৫ এএম, ১১ মার্চ,সোমবার,২০২৪

Text

সংসারে অভাব অনটন থাকায় ১৮ বছরের লতা রায় এখন বাদাম বিক্রিতা। মেধাবী এই মেয়েটি এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেছে এ-প্লাস পেয়ে।

নীলফামারী সরকারি কলেজের ছাত্রী লতা। তার প্রচণ্ড মাথার ব্যথা, যন্ত্রণা। অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসাও করাতে পারছে না লতা। লতার বয়স যখন সাড়ে ৪ বছর তখন তার মা ভানুমতি রায় মারা যান। বাবা জগন্দ্র রায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে রয়েছে হিমন রায় নামের ১৫ বছরের ছেলে। সংসারে অভাব অনটন থাকায় এখন লতা রায়ের বাবা ঢাকায় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করছেন।

নীলফামারী সদরের গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ডারারপাড় নিজপাড়া গ্রামের মেয়ে লতা রায় বিমাতার সংসারে অত্যাচার সহ্য করে থাকতে হচ্ছে। জীবনের স্বপ্ন সে একজন চিকিৎসক হবে। তাই নিজের ভবিষ্যত গড়তে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের লেখপড়ার অর্থ জুগিয়েছিল এতোদিন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসিতে এ-প্লাস পেয়ে সে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে। আগামী এপ্রিল মাসেই মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে লতা রায়। কিন্তু বাবার অভাবী সংসারে অর্থ জোগাতে লতা রায় রাস্তায় নেমেছিল বাদাম বিক্রি করতে। লোক চক্ষুর আড়ালে বাদাম বিক্রিতে নেমে তাকে পরিধান করতে হয় বোরখা।

লতা রায় জানান, বিশ্বাস, আশা ও ভালোবাসা জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাসী, আশাবাদী, ভালোবাসায় পরিপূর্ণ মানুষ ব্যর্থ হয় না এবং হতাশাগ্রস্তও হয় না। হতাশা আসে ব্যর্থতার গ্লানি থেকে। সাধারণত মানুষ প্রাপ্তিতে তৃপ্ত ও অপ্রাপ্তিতে অতৃপ্ত হয়। তাৎক্ষণিক লাভ-ক্ষতিকে মানুষ সফলতা ও ব্যর্থতার মানদণ্ড মনে করে এবং সেভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তাই আমি নিজের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে বাদাম বিক্রি করতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হই। নীলফামারী শহরে এসে দুই থেকে তিন কেজি বাদাম বিক্রি করতাম। যা লাভ হতো তা খারাপ ছিল না। এভাবে নিজেকে তৈরি করছিল লতা আগামীদিনে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে ডাক্তার  হবার স্বপ্নে অর্থের যোগান।

লতা রায়ের বাদাম বিক্রির বিষয় সহ তার পারিবারিক অবস্থা স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পেরে বিষয়টি অবগত করা হয় নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরকে। 

তিনি ঢাকায় থাকায় বিষয়টি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান, ও জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান পল্লবী, আওয়ামী লীগের গোড়গ্রাম ইউনিনের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম ,সভাপতি জাহিদ হাসান খান আলী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম  আজ রোববার বিকেলে লতার বাড়ি পাঠান। সেখানে আসাদুজ্জামান নুর মোবাইলে লতার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন এবং তার মাথা ব্যথার চিকিৎসা সহ লেখাপড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় লতা রায়কে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2