avertisements 2

৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু আছে, রাস্তা নেই!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:০৩ পিএম, ১৩ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫২ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি সেতু কাজে আসছে না এলাকাবাসীর। নওগাঁর বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীতে নির্মাণ করা সেতুটি এখন স্থানীয়দের কাছে শুধু সান্ত্বনার প্রতীক। সমতল থেকে অন্তত ৩০ ফুট উঁচু সেতুর মূল কাঠামোতে পথচারীদের উঠা নামার চিত্র অনেকটা পর্বত জয়ের মতো। নদী পারাপারে সহজ পথ না থাকায় স্থানীয়রা গত দেড় বছর ধরেই সেতুর সংযোগ সড়ক ছাড়াই অসমতল পথে ঝুঁকি নিয়ে করছে চলাচল।

নওগাঁর বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীর কাদিবাড়ী ঘাট। এ ঘাট দিয়ে দুই পাড়ের অন্তত শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের নদী পারাপার। দীর্ঘ ভোগান্তি অবসান করতে ২০১৭ সালে ৩১ অক্টোবরে এ ঘাটে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নতুন দিনের আশা জাগে এলাকাবাসীর কাছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেতুর নির্মাণ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ। কিন্তু সেতু থেকে মূল সড়কে প্রায় ১৬০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করে ফেলে রাখে ঠিকাদার। এতে বাধ্য হয়ে অসম্পূর্ণ সড়কের অন্তত ৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মূল সেতুর ওপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

এক এলাকাবাসী বলেন, ‘রাস্তা ছাড়া ব্রিজ হয়ে কি লাভ হইছে? রাস্তা ছাড়া ব্রিজ দিয়ে আমরা কী করব? আগে আমাদের দরকার রাস্তা, তারপর ব্রিজ।’

আরেক এলাকাবাসী বলেন, ‘এই ব্রিজটা হইছে দুই বছর হচ্ছে। কিন্তু এখনও রাস্তা হওয়ার কোনো আশা দেখছি না। এটা আমাদের চলাচলের প্রধান রাস্তা।’

ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ কাজের দরপত্র পায়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের দাবি, জমি অধিগ্রহণ সুযোগ না থাকায় আটকে রয়েছে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ।

সেতু নির্মাণ ঠিকাদার মাসুদ রানা বলেন, ‘এই ব্রিজটা করার পূর্বেই রাস্তার জায়গার জমিগুলো অধিগ্রহণ করা উচিৎ ছিল। আমাদের এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না। যার ফলে তারা জমি অধিগ্রহণ করেনি। ধরেন, একটা লোকের দশ কাঠা জায়গা আছে কিন্তু রাস্তার জন্য তার সাত কাঠা জায়গা চলে যাচ্ছে। এটা তো হৃদয়বিদারক। আমাকে জায়গা ক্লিয়ার করে দিবে আমি করে দিব।’

সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দ্রুত চালু করার আশ্বাস স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগের এ কর্মকর্তার। আর জন প্রতিনিধিরা বলছেন, জনগুরুত্ব পূর্ণ সেতুটি চালু হলে ব্যাপক উপকৃত হবে এলাকাবাসী। বদলগাছী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোকলেছুর রহমান, ‘এখানে মূল সমস্যা হচ্ছে, রাস্তা অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। জমি অধিগ্রহণের সুযোগ থাকলে রাস্তা অনেক আগেই হয়ে যেত।’

বদলগাছী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা জমি অধিগ্রহণে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু অধিগ্রহণ করতে পারিনি। এবং এলাকাবাসীর দাবিও ছিল জমি অধিগ্রহণের। আসলে এই প্রকল্পের আওতায় অধিকাংশ জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। এ নিয়ে এলাকাবাসী আলোচনায় বসেছে। তারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই আন্তরিক। আশা করছি এই সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হবে।’

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ করা সেতুটি দৈর্ঘ্য ৯০ দশমিক ১৫ মিটার, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কেটি ২১ লাখ ২শ ৭৭ টাকা।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2