avertisements 2

ঢাকায় নেওয়ার কথা বলে গৃহবধূকে বাসে ধর্ষণ, বাসসহ চালক আটক

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২১ অক্টোবর,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:১১ পিএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪

Text

 ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাসচালক জাহাঙ্গীর আলম (কালো টি-শার্ট পরা)। ছবি : সংগৃহীত 

ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসে উঠিয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছেন চালক। পরের দুই দিন তাঁকে আবার ধর্ষণ করা হয়। এই অভিযোগে ইমাম পরিবহনের বাসচালক জাহাঙ্গীর আলমকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিব।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ওই গৃহবধূ (২২) ঢাকায় তাঁর স্বামীর কাছে যেতে গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বাড়ি থেকে বৃদ্ধ নানার সঙ্গে বের হন। দুপুরের দিকে তাঁর নানা ভুল করে ঢাকার বাসে না উঠিয়ে হালুয়াঘাটগামী একটি বাসে তুলে দেন তাঁকে। গৃহবধূর স্বামী তাঁকে ফোন করে জানতে চান, এখন তিনি কোথায় আছেন। কিন্তু তিনি না বলতে পারায় বাসচালকের সহকারীকে মোবাইল ফোন দিতে বলেন।
সহকারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তিনি ঢাকার বাসে না উঠে ভুল করে হালুয়াঘাটের বাসে উঠেছেন। পরে বাসের চালক গৃহবধূকে হালুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঢাকাগামী অন্য বাসে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বেলা ৩টায় বাসচালকের সহকারী ওই নারীকে বাসস্ট্যান্ডে এক দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য বাসে উঠিয়ে দিতে সামনে যান।

এ সময় অন্য এক বয়স্ক নারী জানতে চান তিনি কোথায় যাবেন? সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া এলাকার বাসিন্দা ইমাম পরিবহনের বাসের চালক জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি ঘটনাটি শুনে ওই নারীর পিছু নেন। যে বাসে করে ওই গৃহবধূ হালুয়াঘাটে এসেছিলেন সেই বাসের চালক তাঁকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠিয়ে দেন। সুযোগ বুঝে সেই বাসে উঠে পড়েন জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর ওই নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাঁকে জানান, এই বাসে গেলে ঢাকায় যেতে গভীর রাত হয়ে যাবে। তিনি যেন তাঁর বাসে ঢাকায় যান।
তাঁর বাস রিজার্ভ করা আছে এবং ধারা বাজার এলাকায় রাখা। রাত ৮টার মধ্যেই ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

ওই নারী সরল বিশ্বাসে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ধারা বাজার মুরগিমহল এলাকায় নেমে পড়েন। তারপর জাহাঙ্গীর ওই নারীকে নিয়ে মুরগিমহলের পাশে নির্জন স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখা ইমাম বাসে উঠে বসতে বলেন। বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে ওই বাসের চালক জাহাঙ্গীর বাসে উঠে দরজা বন্ধ করে দেন এবং ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ওই নারী চিৎকার করতে চাইলে গলা চেপে ধরে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। ধর্ষণের পর তিনি নারীকে বাসে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে যান। এক ঘণ্টা পর জাহাঙ্গীর ফিরে এসে ওই গৃহবধূকে বিয়ে করবেন বলে প্রলোভন দেখান। ওই দিন রাত ১০টায় জাহাঙ্গীর ইটভাটার রিজার্ভ যাত্রী নিয়ে রওনা হন এবং ভোরে নারায়ণগঞ্জে পৌঁছান।

১৭ অক্টোবর সকালে পুনরায় ওই নারীসহ বাস নিয়ে জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা ৩টায় হালুয়াঘাট উপজেলার নাগলা বাজার পৌঁছে বাসের সহকারী ফয়সালকে বলেন, ‘এই মহিলাকে বিয়ে করেছি। সে তোর নতুন ভাবি। তাকে বাড়িতে নিয়ে যা। আমি রাতে আসব।’ পরে জাহাঙ্গীর রাতে ফয়সালদের বাড়িতে এসে একই পরিচয় দেন এবং ওই নারীকে দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করেন। ১৮ অক্টোবর জাহাঙ্গীর ওই নারীকে নিয়ে হালুয়াঘাট পৌর শহরের পাগলপাড়া এলাকায় স্বামী স্ত্রী-পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেন এবং তৃতীয়বার ধর্ষণ করেন। পরে ওই নারীকে বাসায় রেখে জাহাঙ্গীর সেখান থেকে চলে যান। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না ধর্ষণের শিকার ওই নারী। পরে সুযোগ বুঝে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী তাঁর বাবাকে মোবাইলে বিষয়টি জানান। ওই নারীর বাবা হালুয়াঘাট থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানান। তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ওই নারীকে পাগলপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে সেই ইমাম বাসসহ জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে।

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন, এ ঘটনায় আজ সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন ওই নারী। দুপুরে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2