avertisements 2

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে চার ঘণ্টা আটকে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্যাতন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ মে,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:১৩ এএম, ১২ মে,রবিবার,২০২৪

Text

খুলনার কয়রায় উত্তরচক কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক অধ্যাপককে কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী অধ্যাপকের নাম ড. মো. নজরুল ইসলাম।  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের  অধ্যাপক তিনি। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ। তিনি মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।

শুক্রবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের মহারাজপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বাড়িসংলগ্ন রাস্তায় প্রথমে হামলা এবং পরে তার বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে এ হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানান তারা।

আহত অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৫ মে) কয়রা উত্তরচক কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। তিনি সেখানে নিয়োগবিধি অনুযায়ী ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অধ্যক্ষ পদে লিখিত পরীক্ষায় কেউ পাস করেনি। তারপরও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ তার পছন্দের প্রার্থী মাদ্রাসাটির উপাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানকে নিয়োগ দিতে চাপ সৃষ্টি করেন।  এ সময় অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে চান।

এরপর তিনি নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধির গাড়িতে করে ফেরার পথে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে তাদের গাড়ি থামিয়ে প্রথমে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওই শিক্ষককে চড় মারেন এবং তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এ সময় ওই অধ্যাপককে ফেলে রেখে ডিজির প্রতিনিধি চেয়ারম্যানের কথামতো নিয়োগের কাগজে সই করে চলে যায়।

কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা ২০-২৫ জন লোক তাকে কিল-ঘুষি মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামায়। এরপর চেয়ারম্যানের বাড়ির একটি কক্ষে আটকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করে। জোরপূর্বক নিয়োগের কাগজে সই নেয়।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনেছি। অধ্যাপক নজরুল এখন ঢাকায় ফেরার পথে আছেন। তার ওপর হামলার বিষয়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএমএস দোহা  বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনেছি। হামলার শিকার ওই শিক্ষক দ্রুতই অভিযোগ দায়ের করবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ঘটনায় শনিবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ড. একেএম মো. লুৎফর রহমান সই করা এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে ওই পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সেখানে রাষ্ট্রীয় কাজে দায়িত্বরত ছিলেন।

এতে আরও বলা হয়, এ হামলার ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল মাহমুদসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানায় সমিতি।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2