avertisements 2

সন্তানের পা পুড়িয়ে ভিক্ষা করাতেন মা, সেই টাকায় খেলতেন জুয়া

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০১:৫৫ এএম, ১৮ মে,শনিবার,২০২৪

Text

শিশু সন্তানের পায়ে পলিথিন মুড়িয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিতেন। সেই পোড়া পা দেখিয়ে মেয়েকে নিয়ে ভিক্ষা করতেন হোসনে আরা বেগম (৩৮) নামে এক পাষণ্ড মা। সেই টাকায় জুয়ার আখড়ায় খেলতেন লুডু। পরে এক দম্পত্তির কাছে গৃহকর্মী হিসেবে মেয়েকে নিয়োগ দেন। সেই দম্পতির কাছ থেকে টাকা আদায় করতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে সেই মামলার তদন্তে নেমে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

গত রোববার রাত ১০দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বদনা শাহ মাজার এলাকা থেকে হোসনে আরা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তার হোসনে আরা বেগম রাঙামাটি সদর থানার মৃত আব্দুল খালেক ভূঁইয়ার মেয়ে।

পিবিআই জানায়, গত বছরের ২৭ এপ্রিল মো. রাশেদ ও লিমু আক্তার নামে এক দম্পতির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে তার ১১ বছর বয়সী মেয়ে রাশেদা আক্তারকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন হোসনে আরা বেগম। অভিযোগটি পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। তদন্তে নেমে পিবিআইয়ের এসআই জাহেদুজ্জামান চৌধুরী শিশু রাশেদা আক্তারকে উদ্ধার করে আদালতে পাঠান। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে শিশু রাশেদা উল্লেখ করেন, সে বদনা শাহ মাজারের সামনে ভিক্ষা করতো। তার মা হোসনে আরা বেগম পলিথিন দিয়ে তার পা পুড়ে দিতেন। পোড়া পা দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষা করতো সে। ভিক্ষায় পাওয়া টাকা দিয়ে তার মা লুডু খেলতেন। তার ছোট ভাই এক্সিডেন্ট করে পা ভেঙ্গে ফেলায় চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয়। তখন রাশেদ ও লিমু তার মাকে আর্থিক সহায়তা করেন। পরে তাদের বাসায় রাশেদাকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ দেওয়া হয়।

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে, হোসনে আরা টাকা আদায়ের জন্য রাশেদ ও লিমুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করেছেন। অপহরণের ঘটনাটি সত্য নয় মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। আদালত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে সন্তানের পা পুড়িয়ে ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় জড়ানোর দায়ে হোসনে আরা বেগমের বিরুদ্ধে শিশু আইন ২০১৩-এর ৭১ ধারা অনুযায়ী মামলার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, গত বছরের ১৯ নভেম্বর পাঁচলাইশ থানার এসআই নুরুল আলম মিয়া বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই মামলাও পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মর্জিনা আকতার সমকালকে বলেন, ‘হোসনে আরা বেগম ধূর্ত প্রকৃতির। নিজের মেয়েকে দিয়ে তিনি ভিক্ষা করাতেন। ভিক্ষা করাতে গিয়ে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের জন্য পলিথিন মুড়িয়ে সন্তানের পা পুড়ে ক্ষত তৈরি করতেন। সন্তানের ভিক্ষার টাকায় জুয়া খেলতেন মা। পরে স্বেচ্ছায় মেয়েকে গৃহকর্মীর কাজে নিয়োগ করেন। অহেতুক হয়রানি করে টাকা আদায়ের জন্য গৃহ মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।’

তিনি বলেন, তাকে গ্রেপ্তার করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2