avertisements 2

ইলিশ উৎসবে ইলিশের সংকট!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৪২ পিএম, ৫ মে,রবিবার,২০২৪

Text

বরগুনায় সার্কিট হাউজ মাঠে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ইলিশ উৎসব। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার এম আমিন-উল-আহসান ইলিশ উৎসবের উদ্বোধন করেন।

এ ইলিশ উৎসবে জেলার ছয় উপজেলা থেকে স্টল বসানো হয়। যেখানে ছিল ইলিশ দিয়ে তৈরি করা নানান রকমের বাহারি খাবার। তবে ইলিশের মৌসুম না থাকায় উৎসব মাঠে ইলিশের পরিমাণ ছিল খুবই কম। অসময়ে ইলিশ উৎসব করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের মেলবন্ধন সৃষ্টি, সুলভ মূল্যে ক্রেতাদের কাছে ইলিশ বিক্রি করা, বরগুনার ইলিশের ভাণ্ডার সম্পর্কে সবাইকে জানানোর উদ্দেশ্যে বরগুনার পায়রা বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর মাছের স্বাদ সম্পর্কে জানাতে ব্যতিক্রমী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

এ উৎসবে ইলিশ বিক্রির পাশাপাশি বরগুনা ছয় উপজেলার তৈরি বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীও ছিল। যেখানে পান্তা ইলিশ, ইলিশ খিচুড়ি, ইলিশ পোলাও, ইলিশ বিরিয়ানি, লেজ দিয়ে ভর্তা, ইলিশ কাবাব, ইলিশের ডিম ভুনা, আস্তা ইলিশ, ইলিশের ভুঁড়ি ভুনা, ইলিশের মাথা দিয়ে কচু শাক, ভাপা ইলিশ, ইলিশের মালাইকারি, ইলিশ ভাজা, সরষে ইলিশ, ইলিশের মাথা দিয়ে পুঁইশাক রান্না, ইলিশের পড়াটা, নারিকেল ইলিশ, ইলিশের সন্দেশ পাওয়া যায়।

২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর বরগুনায় প্রথমবারের মতো ইলিশ উৎসবের আয়োজন করেন বরগুনা জেলা প্রশাসন ও বরগুনা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম। করোনার প্রভাব থাকার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়নি।

তবে এ বছর ইলিশের মৌসুম চলে যাওয়ায় ইলিশ উৎসবে মাঠে কাঁচা ইলিশের পরিমাণ ছিল খুবই কম। মাত্র তিনটা স্টলে সব মিলিয়ে দুই থেকে তিন মণ ইলিশ ছিল। এরমধ্যেও জাটকা দেখা গেছে। ইলিশের পরিমাণ কম থাকায় দাম ছিল খুব চড়া। যা সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে ছিল। তাই ইলিশ উৎসবে এসে ক্রেতারা হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।

ইলিশ উৎসব মাঠে ইলিশ মাছ কিনতে আসা মোহাম্মদ রফিক মিয়া বলেন,‘বরগুনা জেলা প্রশাসন অসময়ে ইলিশ উৎসব আয়োজন করেছে, যা নিতান্তই হাস্যকর। আমাদের সঙ্গে তারা ঠাট্টা করেছে মাত্র। ইলিশের সব স্টল ঘুরে দেখেছি সব মিলিয়ে দু-তিন মণ ইলিশ হবে। ইলিশের দামও অত্যধিক যা আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।’

ইলিশ উৎসবে বিক্রেতা মো. রুবেল মিয়া বলেন,‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ২০ কেজি’ ইলিশ ‘বিক্রি করেছি। এতে যা লাভ হয়েছে তা দিয়ে আমাদের খরচে উঠবে না। আমাদের লস হবে।’

ইলিশ উৎসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সালে,‘আমরা প্রথম ইলিশ উৎসবের আয়োজন করেছি ২০১৯ সালের অক্টোবরে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বরগুনার ইলিশের প্রাপ্তি এবং ইলিশের স্বাদ বিশ্ব দরবারে জানানো।’

তিনি আরও বলেন, ইলিশ উৎসবের মূল লক্ষ্য হিসেবে আমরা চেয়েছি’ ইলিশের’ প্রধান প্রজনন মৌসুমে উৎসব উদযাপন করবো। যেখানে আলোচনা হবে ইলিশের প্রধান মৌসুমের গুরুত্ব নিয়ে। কিন্তু এ বছর তার কিছুই হয়নি। উৎসবে ইলিশেরই দেখা পাওয়াটা কষ্টকর। আমরা চাই এবারের ভুল ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে সঠিক সময়ে ইলিশ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর নানান প্রোগ্রাম থাকার কারণে সঠিক সময়ে ইলিশ উৎসব আয়োজন করতে পারেনি। শুধু ইলিশ উৎসবের ঐতিহ্যটা ধরে রাখার জন্য এ উৎসবের আয়োজন করেছি। আগামীতে অবশ্যই সঠিক সময়ে ইলিশ উৎসব আয়োজন করবো।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2