বরিশালে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু হাসপাতালের মেঝেতেও ঠাঁই মিলছে না রোগীর
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ আগস্ট,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:০৩ এএম, ২৭ আগস্ট,
বুধবার,২০২৫

ক্রমাগত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালগুলোতে আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ইতোমধ্যে বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রায় ৯ হাজারে পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বরিশাল অঞ্চলের কোন সরকারি হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের মেঝেতেও নতুন রোগী ভর্তির জায়গা খালি নেই। কিন্তু তারপরেও প্রতিদিনই হাসপাতালমুখি ডেঙ্গু রোগীর স্রোত অব্যাহত আছে। চরম বিব্রত ওয়ার্ডের চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
সরকারি হাসপাতালের বাইরে দ্বিগুণেরও বেশী রোগী বিভিন্ন চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ঘরে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। অপরদিকে বরিশাল মহানগরীসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এবার ভয়াবহ আকারে মশাবাহিত এ রোগের বিস্তার ঘটলেও সিটি করপোরেশনসহ এ অঞ্চলের পৌরসভাগুলোর মশক নিধনে তেমন হেলদোল নেই বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মশক নিধনসহ পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হলেও খুব একটা অগ্রগতি নেই।
চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনেই বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার এক দিনেই ৪০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ১১ দিনে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত শের এ বাংলা মেডিকের কলেজ হাসপাতালসহ বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১১শ’ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘণ্টাই ভর্তি হয়েছেন আরো প্রায় সাড়ে ৩শ’ ডেঙ্গু রোগী।
গতমাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এ অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করে। ২০ জুলইয়ের পরে তা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছে। তবে গত বৃহস্পতিবারই চলতি মৌসুমের সর্বাধিক সংখ্যক, ৪০৫ জন রোগী বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন।
ইতোমধ্যে বরিশাল অঞ্চলে যে ১৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ১০ জনই নারী। এমনকি এবার ২০ বছর থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধারও মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। মৃত ১৬ জনের মধ্যে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন ছাড়াও ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩ জন এবং বরগুনা ও পিরোজপুর জেনারেল হাসপাতালে ১ জন করে ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে।
বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে করোনা ও ডায়রিয়ার মতই বরিশাল শীর্ষে রয়েছে। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপতালসহ জেলাটির বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন ইতোমধ্যে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলাটিতে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও প্রায় ২ হাজার। পিরোজপুরেও ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার ছুঁতে চলেছে। ভোলাতে প্রায় ১ হাজার। বরগুনাতে প্রায় ৯শ’ এবং ঝালকাঠীতে গত মাসের ১০ তারিখে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হবার পরে ইতোমধ্যে প্রায় ৩শ’ আক্রান্ত জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।