avertisements 2

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কুকুর প্রতি ৫০০ টাকা কর নির্ধারণ 

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২১ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:১১ এএম, ২৯ এপ্রিল,সোমবার,২০২৪

Text

প্রতীকী ছবি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পশু পালনের জন্য নতুন কর নিয়ম চালু করেছে। সেখানে কেউ কুকুর পালন করলে কুকুরপ্রতি ৫০০ টাকা বার্ষিক কর প্রদান করতে হবে। এছাড়া কেউ ঘোড়া ও হরিণ পালন করলে প্রতিটির জন্য ১ হাজার টাকা বার্ষিক কর দিতে হবে। সিটি করপোরেশনের এই সিদ্ধান্ত সমালোচনার মুখে পড়েছে।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশন আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬-এর গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রতিটি পোষা জন্তুর জন্য বার্ষিক কর প্রদান করতে হবে। ঢাকা দক্ষিণের ভেটেরিনারি অফিসার ডা. একেএম সালেহ রহমান জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আগে পোষা জন্তু নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো নিবন্ধনের নিয়ম ছিল না। কিছুদিন আগে এই নিয়ম করা হয়েছে।

তিনি জানান, যারা পোষা জন্তুকে নিবন্ধনের আওতায় আনবে তাদের জন্তুকে বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। কুকুরের ক্ষেত্রে মালিক লাইসেন্স নিলে ওই ব্যক্তি কুকুরের জন্য সিটি ভেটেরিনারি থেকে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। তবে বিনামূল্যে ডাক্তার দেখানো যাবে কিনা তা নিয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

ঢাকা দক্ষিণের ডেপুটি চিফ রেভেনিউ অফিসার শাহজাহান আলী এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আদর্শ কর তফসিল অনুযায়ী করপোরেশনের আওতাধীন পোষা জন্তু (কুকুর, হরিণ ও ঘোড়া) পালনের ক্ষেত্রে কর নির্ধারিত রয়েছে। এর আগে পোষা জন্তুর জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনে কর আদায় হয়নি। চলতি অর্থবছরেই পোষা জন্তুর জন্য প্রথম কর আদায় শুরু হয়েছে। আর এরই মধ্যে ২৭টি পোষা প্রাণীর মালিক কর জমা দিয়েছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

বিজ্ঞপ্তিতে পোষা জন্তুর মালিকদের নিজ নিজ অঞ্চলের রাজস্ব বিভাগের বিবিধ আদায় শাখায় উল্লেখিত হারে কর ও করের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদানের অনুরোধ করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই সিটি করপোরেশনের আওতায় পোষা কুকুর রয়েছে ১২৮টি, হরিণ ১৪৫টি ও ঘোড়া রয়েছে ৪৬টি। এসব পোষা জন্তুর মালিকদের ইতোমধ্যে চিঠির মাধ্যমে করের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পোষা জন্তুর ওপর এই করের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলছেন পশুপ্রেমী ও বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এমন সিদ্ধান্তের কারণে মানুষ পোষা জন্তু পালনের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। উন্নত বিশ্বকে অনুসরণ করে যদি কর আরোপ করা হয় তাহলে প্রাণী পালনে আগ্রহ হারাবে মানুষ।

কুকুর পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করে এএলবি অ্যানিম্যাল শেল্টার। সংস্থাটির কাছে প্রায় ৭০টি কুকুর রয়েছে। এসব কুকুর বিভিন্ন স্থান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পরে চিকিৎসা দিচ্ছেন সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের মতে প্রাণী পালনে করের বিষয়টি অযৌক্তিক।

রবিনহুড দ্য অ্যানিম্যাল রেসকিউয়ার-এর ক্লিনিক্যাল অফিসার মনোয়ারা আখতার মুনিয়া এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজধানীতে এমনিতেই প্রাণী উদ্ধারকারী সংস্থা খুব কম। এখন যদি পোষা প্রাণীর ওপর কর আরোপ করা হয় তাহলে অনেকে পোষা প্রাণী পালন করাই বন্ধ করবে। তখন আর কেউ রাস্তায় মার খেয়ে পড়ে থাকা কুকুরগুলোকে বাসায় নিয়ে চিকিৎসা করাবে না, পালন করবে না। উন্নত বিশ্বের মতো চিন্তা করে কর আরোপ করলেই সমাধান হবে না সবকিছুর। এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বেশি হবে বলে জানান এই ক্লিনিক্যাল অফিসার।

ইন্সটিটিউট অভ প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, রাজধানীতে পোষা প্রাণী পালনের একটি ডাটাবেইজ থাকা প্রয়োজন। তার জন্য এককালীন একটি রেজিস্ট্রেশন করার ব্যবস্থা করা যায় এবং এ জন্য একটি ফি নিতে পারে। কিন্তু সব ধরনের কুকুরের জন্য বাৎসরিক কর প্রদানের ব্যবস্থা থাকলে সমস্যা হবে অনেকের।

তিনি বলেন, ইউরোপের দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পোষা প্রাণী পালনের ক্ষেত্রে ডাটাবেইজ ও করের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে তাদের পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি আমাদের শহরে এমনটা করা হয় তাহলে সার্বিকভাবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর এসব পোষা প্রাণীকে কী ধরনের সেবা প্রদান করবে সিটি করপোরেশনের তারও নীতিমালা আবশ্যক।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2