avertisements 2

বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখানো বাড়ছেই, নতুন করে আসছে মেয়র, সংসদ সদস্য ও সচিবদের নাম

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১ অক্টোবর,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৪০ এএম, ৫ মে,রবিবার,২০২৪

Text

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের চলতি মেয়াদে নতুন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য প্রায় ১১ হাজার জনের নাম সুপারিশ করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এই তালিকায় আছেন মেয়র, সংসদ সদস্য, সচিব ও তাঁদের ঘনিষ্ঠজন।

স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভুল তালিকা তৈরি হয়নি। সব সরকারের আমলেই এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তালিকায় এখনো সব প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম যেমন ওঠেনি, তেমনি মুক্তিযুদ্ধে যাননি, এমন অনেক লোকের নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির আইনগত কর্তৃত্ব জামুকার। বর্তমান সরকারের গত পাঁচ বছরে (২০১৯ থেকে ২০২৩) জামুকার বৈঠকের কার্যপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এই সময়ে নতুন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য ১০ হাজার ৮৯১ জনের নাম সুপারিশ করেছে জামুকা। গেজেটভুক্তির জন্য অনেকের নামে সুপারিশ করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা। সুপারিশকারীদের মধ্যে জামুকার সদস্যরাও রয়েছেন। একই সময়ে ২ হাজার ১৯০ জনের নামের গেজেট বাতিল হয়েছে।

তালিকায় আছেন মেয়র, সংসদ সদস্য
গত বছরের ১১ এপ্রিল জামুকার সভায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। সভার কার্যপত্রে বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে তিনি অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে মিন্টো রোডের বাসায় ঘাতকেরা হত্যাকাণ্ড চালানোর পর ভাঙচুর ও জিনিসপত্র লুটপাট করে। এতে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সনদ হারিয়ে যায়।

গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানিয়ে বলেন, তাঁকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর শুনানি হয়। এতে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণিত হন। কিন্তু ডিজিআই নম্বর না থাকায় ২৭ জানুয়ারি জামুকার সভায় তাঁর আবেদন উপস্থাপন করা হয়নি। ডিজিআই নম্বর হলো অনলাইনে বা সরাসরি জামুকার মহাপরিচালক বরাবর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন। পরে ২৭ এপ্রিলের সভায় তাঁকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এত দিন পর কেন গেজেটভুক্ত হলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেরিতে হলে দোষের কী? আমি ভাতা নিতে যুদ্ধ করিনি।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সুপারিশ করেছে জামুকা। তাঁর আবেদনটি গত বছরের ১৯ জুলাই জামুকার বৈঠকে ওঠে। এর আগে যাচাই-বাছাই ও সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও গেজেটভুক্ত না করায় তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেন। মন্ত্রী বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় জামুকার বৈঠকে উপস্থাপন করা যায় বলে মত দেন।

ওই বৈঠকে তাঁকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়। ওই বছরের ২৪ অক্টোবর জামুকার সভায় ইহসানুল করিমের আবেদনের বিষয়ে কিছু অসামঞ্জস্য তুলে ধরা হয়। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি জামুকার বৈঠকে আবেদনের বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

যদিও পরে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে ইহসানুল করিমকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সুপারিশ করে জামুকা। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ইহসানুল করিম এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের সুপারিশ
গত বছরের ১৯ জুলাই জামুকার সভায় পটুয়াখালীর বাউফলের হেমায়েত উদ্দিনকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সুপারিশ করেন জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান। আবেদনের ওপর তিনি লিখেছেন, ‘আবেদনকারী মাদারীপুর জেলায় খলিল বাহিনীর ক্যাম্পে থেকে যুদ্ধ করেছেন।’

জানতে চাইলে শাজাহান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হেমায়েত আমার পরিচিত, তাই সুপারিশ করেছি।’ একই বৈঠকে সাবেক মন্ত্রী ও দিনাজপুরের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার জহুরুল হক ও রফিকুল হকের নাম গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন। এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা বলেই হয়তো সুপারিশ করেছি। এখন ঠিক মনে পড়ছে না।’

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর–৫ আসনের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম কক্সবাজারের মহেশখালীর গাজী আবদুস সাত্তারকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যয়ন দিতে সুপারিশ করেন। গত বছরের ২৪ অক্টোবরের সভায় উত্থাপিত আবেদনে দেখা যায়, উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি তাঁর আবেদন নামঞ্জুর করেছে। পরে আবেদনটি আপিল কমিটির মাধ্যমে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা–১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্‌ বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার লুৎফুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে সুপারিশ করেন। এতে তিনি লিখেছেন, লুৎফুর রহমান গেজেটভুক্ত না হওয়ায় সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শাহানারা বেগমের স্বামী মৃত ইমান আলীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করেন। আবেদনটি নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার জামুকার বৈঠকে উত্থাপন করেন। আলোচনার পর তাঁর নাম গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।

সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও জামুকার সদস্য মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের নুরুল মোমিন নামের এক ব্যক্তির গেজেট সংশোধনের সুপারিশ করেছেন। আবেদনে তিনি লিখেছেন, ‘আমি 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2