avertisements 2

মাসে সাড়ে ৪ লাখ টাকা মূল বেতন চান চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৭ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৭ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

বিদ্যমানের চেয়ে আড়াইগুণ বেশি সাড়ে চার লাখ টাকা মূল বেতন দাবি করেছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাবি অনুযায়ী বাড়ানো হলে মূল বেতন ও ভাতা মিলিয়ে মাসে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রাপ্য দাঁড়াবে প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে ওয়াসা বোর্ডের সভায় এ প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন সদস্যরা।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের ৬৫তম সভায় বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদনকে আলোচ্যসূচী হিসেবে উপস্থাপন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।

নিয়ম অনুযায়ী, বেতন-ভাড়া বাড়ানোসহ যে কোনো আবেদন ওয়াসার বোর্ড সভায় পাস হলে এরপর সেটি অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

২০১৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত ৩৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ বর্তমানে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল বেতন পান। সর্বশেষ আবেদনে তিনি মূল বেতন বাড়িয়ে সাড়ে চার লাখ টাকা করার দাবি করেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট সমিতির সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এমডি সাহেব বেতন বাড়িয়ে সাড়ে চার লাখ টাকা করার আবেদন করেছেন। সেই আবেদন তিনি বোর্ড সভায় এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপন করেন। তবে এজেন্ডা পাস হয়নি। সদস্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এমডির আবেদন যাচাইবাছাইয়ের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড সভায় একেএম ফজলুল্লাহ’র বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন সাত নম্বর আলোচ্যসূচী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। আবেদনে তিনি বেতন বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন- বর্তমানে ঢাকা ও খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক চট্টগ্রামের এমডির চেয়ে দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি বেতন পান। এ অবস্থায় তিনি মূল বেতন বাড়িয়ে সাড়ে চার লাখ টাকায় উন্নীত করার অনুরোধ করেন।

একই ধরনের একটি আবেদন ২০২১ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় তুলেছিলেন এমডি একেএম ফজলুল্লাহ। তখনও বোর্ড সদস্যদের আপত্তিতে যাচাইবাছাইয়ের জন্য দুই সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যরা ছিলেন- বোর্ড সদস্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিৎ কর্মকার এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট সমিতির সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন। তবে গত আট মাসেও ওই কমিটি কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেনি।

আবার একই ধরনের আবেদন আলোচ্যসূচী হিসেবে সভায় উত্থাপন করা হলে বোর্ডের সদস্যদের কয়েকজন জোরালো আপত্তি করেন। তারা আগের কমিটির প্রতিবেদন উত্থাপনের দাবি করেন। তখন ফজলুল্লাহ জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ওই কমিটি কাজ করতে পারেনি। তারা কোনো প্রতিবেদনও দেয়নি। তখন বোর্ড সদস্যরা আবারও একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে পাস হয়।

চার সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছে বোর্ড সদস্য স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে। সদস্য হিসেবে আছেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসান খালেদ ফয়সাল, শওকত হোসেন এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) শামসুল আলম।

দ্বিতীয় দফায় কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়া শওকত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগের কমিটিতেও আমি সদস্য ছিলাম। আসলে নানা কারণে আমরা বসতে পারিনি। আমরা কাজ করতে পারিনি। এখন আবার কমিটিতে আমাকে রাখা হয়েছে। আশা করি, এবার প্রতিবেদন দিতে পারব।’

জানা গেছে, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বেতন বাড়ানোর আবেদন যৌক্তিক কি না সেটা যাচাইবাছাই করে প্রতিবেদন তৈরি করে কমিটিকে আগামী বোর্ড সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ড সভার এক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক মূল বেতনের সঙ্গে বাড়ি ভাড়া, আপ্যায়ন, চিকিৎসা ও বিশেষ ভাতা পান। এ হিসেবে তার বর্তমান বেতন-ভাড়া চার লাখ টাকার ওপরে। তার আবেদন অনুযায়ী বেতন বাড়ানো হলে সেটা দশ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ২০০৯ সালের ৬ জুলাই থেকে একযুগেরও বেশিসময় ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন প্রায় ৮০ বছর বয়সী প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2