avertisements 2

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পূন:প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে

প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমন্বয়ে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে প্রতিবাদ সমাবেশ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১১ মার্চ,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:১৮ পিএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪

Text

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, গুম খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং আগামীতে একটি সুষ্ঠু এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে গত ৭ই মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১১ঃ৩০ মিনিটে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমন্বয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজিত হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জনাব রাশেদুল হক রাশেদ এর আহবানে সাড়া দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত শত শত প্রবাসী বাংলাদেশীদের মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখরিত হয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাস্থ জাতীয় পার্লামেন্ট ভবন প্রাঙ্গণ।
সমাবেশে যোগদান করে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের সিনেটর জর্ডান স্টিল, সিনেটর ডেভিড সুব্রিজ এবং সিনেটর জেনেট রাইস।

সিনেটর জর্ডান স্টিল বলেন
 বাংলাদেশে ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচার এবং ভবিষ্যতে তা বন্ধ করতে আমরা পদক্ষেপ নেব। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের কাছে পাওয়া আইন-শৃঙ্খলা খাতের সাহায্যের দ্বারা নিরীহ মানুষ, বিরোধী দলের কর্মী এবং সাংবাদিক হত্যা আমরা কখনোই মেনে নেব না। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের এই সকল কার্যকলাপের নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন আমরা আমাদের সংসদে বাংলাদেশ সরকারকে এই সকল খাতের সাহায্য বন্ধ করতে বলবো। অস্ট্রেলিয়ান সরকার কখনোই মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নেবে না। তিনি সরকার এবং তার দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সরকারের দ্বারা নির্যাতিত এবং তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন।
 তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা সকল বাংলাদেশীদের, তার এবং অস্ট্রেলিয়ান গ্রীন পার্টির পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির জন্য শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

 সিনেটর  ডেভিড সুব্রিজ বলেন,
 আপনাদের এই বিশাল সমাবেশ এবং সম্মিলিত ধ্বনি অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের ভেতর পর্যন্ত শুনতে পাবে। সারা বিশ্বই আজ জেনে গেছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের কথা। বিশ্বের আর কোন দেশ এই নিয়ে চিন্তিত হোক বা না হোক, তিনি এবং তার সরকার অবশ্যই এই দুঃশাসনের প্রতিবাদ করবেন। তিনি এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ববর্তী সরকারের নীরবতার জন্য লজ্জা প্রকাশ করেন। তিনি ছয় শতরও অধিক বিচার বহির্ভূত বিরোধী দলীয় কর্মী হত্যার নিন্দা করে বলেন, তাদের নতুন সরকারের এই অল্প সময়ের মধ্যেই পার্লামেন্টে বাংলাদেশের সহায়তা বিষয়ে প্রতিবাদ করেন, বিদেশি এই সাহায্য বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি নিশ্চিত করে বলেন, এই সমাবেশ শেষ করেই তিনি অদ্য দিনের পার্লামেন্ট অধিবেশনে এই বিষয়ে উপস্থাপন করবেন। এছাড়াও তিনি সংসদের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন এবং বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করার নিশ্চয়তা প্রদান করেন। সবশেষে তিনি সমবেতd শতশত বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান এবং আইনশৃঙ্খলা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য তিনি এই প্রতিবাদকে অব্যাহত রাখতে বলেন।

 সিনেটর জেনেট রাইস, (চেয়ারম্যান কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স রেফারেন্স কমিটির ।
চেয়ারম্যান কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স লিগ্যাল লেজিসলেসন কমিটি)বলেন:
 “আমাদের দল সারা বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাগ্রে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের উপরে হামলা তাদের গুণ এবং খুন করা অস্ট্রেলিয়াতে আমাদের মত প্রথম শ্রেণীর দেশের জনগণকেও প্রভাবিত করে। আমরা শুধু মুখেই বলবো না আমরা বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষের জন্য কাজও করে যাব। আমরা বিরোধী দলে থাকাকালীন জানতে পারি এখন আমাদের সরকার কঠোরভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের সরকারের ক্ষমতা অপব্যবহারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের নির্যাতন নিপীড়ন এবং বাকস্বাধীনতা হরণ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। স্বাধীন দেশের জনগণকে প্রশাসনের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জেল হত্যা এবং নিরুদ্দেশ করা তাদের বন্ধ করতেই হবে। আমাদের পূর্ববর্তী সরকারকেও এর বিরুদ্ধে কার্যকরী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এখন আমরা ক্ষমতায় থেকে তা বাস্তবায়নে অনেক সচেষ্ট হব। আপনাদের স্বার্থে এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী নির্যাতিতদের স্বার্থে আমাদের সরকার এর জন্য শুধু আলোচনাই করবে না প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত থাকবে। বাংলাদেশে মানবাধিকার পূর্ণ প্রতিষ্ঠান না হলে আমাদের সরকারের সাথেও সুসম্পর্ক লঙ্ঘিত হবে।
 সবশেষে তিনি সমবেত জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা আপনাদের জায়গায় থেকে প্রতিবাদ করেন এবং আমরা প্রতিবাদ করব সংসদে। ভবিষ্যতে আমরা সকলেই একসাথে সফল হবো।“

 ক্যানবেরা চলো কমিটির আহবায়ক জনাব মোহাম্মদ হায়দার আলী (সাবেক সদস্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল কেন্দ্রীয় কমিটি)
 এবং সদস্য সচিব জনাব অমি ফেরদৌস( সাবেক  আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটি) এর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়া সহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সমন্বয়ে আয়োজিত এই সভায় অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে শত শত প্রবাসী বাংলাদেশি যোগদান করেন।

 সভায় অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফখরুল মুন্না,  মফিজুল ইসলাম সাগর,  আশওয়াদুল হক, মনজুরুল হক আলমগীর, আশরাফুল আলম রনি, মাসুদ পারভেজ,  মোবারক হোসেন,  সরোয়ার কামাল চৌধুরী এম এ হাসান,  আরিফুল হক,  রুহুল আমিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। তারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক এবং রাজনৈতিক সকল মামলা বিনা শর্তে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
 নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের চলমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, অগণতান্ত্রিক রাজনীতি ও মানবতা লঙ্ঘন এবং গুম-খুনের প্রতিবাদ জানান। বক্তারা সকলেই আগামীতে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা এবং পরিচালনা করেন জনাব অমী ফেরদৌস এবং সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ হায়দার আলী।

পরবর্তীতে প্রতিবাদে অংশকারীদের পক্ষ ১০জন  প্রতিনিধি পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরে গিয়ে অস্ট্রেলিয় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হিয়ারিং -এ যোগদান করেন।
 সেখানে অস্ট্রেলিয়ার নিম্নে উল্লেখিত ১২জন সিনেটর উপস্থিত হয়ে  দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে  বাংলাদেশ সরকারের উপর কঠোর চাপ প্রয়োগ করার জন্য জন্য জোড়ালো ভূমিকা পালন করবেন মর্মে অঙ্গিকার করেন।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2