পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি গুলিতে তুর্কি বংশোদ্ভূত মার্কিন তরুণী নিহত
                                    
                                    
                                        
                                            ডেস্ক রিপোর্ট
                                        
                                    
                                   
                                     প্রকাশ:  ১২:০০ এএম,  ৭ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট:  ০১:০৭ পিএম,  ৩১ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২৫
                                
 
                        
                    আয়েশানূর এজগি এইগি। ছবি: সংগৃহীত
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তর্কি বংশোদ্ভুত যুক্তরাষ্ট্রের এক তরুণী নিহত হয়েছেন।
ইহুদী বসতি বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার পশ্চিম তীরের নাবলুসের কাছে বেইতা শহরে এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে আয়েশানূর এজগি এইগি নামের ওই তরুণী নিহত হন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতেই ২৬ বছর বয়সী এইগি মারা গেছেন, এমনটা দাবি করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
শুক্রবারের ওই কর্মসূচিতে অংশ নেয়া একজন বিবিসিকে জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্টের হয়ে ওইদিনই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন এইগি ।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দুঃখপ্রকাশ করলেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ইসরায়েলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘বর্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নাবলুসে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীই এইগিকে গুলি করে হত্যা করেছে।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউজ মিত্র ইসায়েলকে দোষারোপ না করলেও ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন জরুরিভিত্তিতে ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করছে।
তুর্কি সংবামাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এইগির জন্ম তুরস্কের আনতালিয়ায়।
বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক ওই তরুণী গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই তাকে নাবলুসের রাফাদিয়া হাসপাতালে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ওই হাসপাতালের প্রধান ডা. ফুয়াদ নাফা নিশ্চিত করেছেন, এইগির মাথায় গুলি লেগেছিল।
ঘটনার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ওইদিন ঘটনাস্থলে দায়িত্বপালনরত ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ করে এক বিক্ষোভকারী পথর ছুড়ছিলেন। পরে ওই বিক্ষোভকারীর উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি ছোড়ে।
সেখানে কোনো বিদেশি নাগরিক মারা গেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে আইডিএফ বলেছে, ঘটনার বিশদ বিবরণ এবং কোন পরিস্থিতিতে ওই তরুণী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তবে এইগির সঙ্গে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী জনাথন পোলাক দাবি করেছেন, তিনি পরপর দুটি গুলির শব্দ শুনেছেন।
এইগি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনিই প্রথমে তার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন; চেষ্টা করেছিলেন, হাত দিয়ে চেপ ধরে রক্তপাত ঠেকানোর।
নিজের হাতে লেগে থাকা রক্ত দেখিয়ে পোলাক বলেন, “আমি দেখলাম সে (ইয়েগি) একটি গাছের পাশে মাটিতে পড়ে আছে। তার মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। আমি পরীক্ষা করে দেখলাম তার নাড়ির গতি খুবই ধীর। এরপর আমরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকি।
“সেখান থেকে তাকে আমরা প্রথমে গ্রামের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখান থেকে পরে তাকে চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যান, তারা (বাঁচানোর) চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সম্ভব হয়নি।”
ক্ষুব্ধ পোলাক বলেন, এইগি যুক্তরাষ্ট্রের হওয়ার কারণেই হত্যার ঘটনাটি এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
আইডিএফের বিবৃতির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিবিসির ‘নিউজআইওয়ার’কে পোলাক বলেন, সেখানে সংঘর্ষ হয়েছিল ঠিকই কিন্তু তা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য হুমকি ছিল না বলে মনে করেন তিনি।
তার দাবি, আলাদা একটি স্থানে এইগিকে আলাদাভাবে গুলি করা হয় এবং ওই জায়গায় সেনাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
এদিকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিংসঘ।
বিশ্ব সংস্থার মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দেখতে চাই এবং জড়িতদের জবাবদিহি করতে হবে।”
বেসামরিক মানুষকে অবশ্যই সব সময় সুরক্ষা দিতে হবে বলে বলেও তিনি জানান।
নয় দিন ধরে অভিযান চালানোর পর শুক্রবার পশ্চিম তীরের জেনিন শহর থেকে সরে যায় ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানকার শরণার্থী শিবিরও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, নয় দিনের ওই অভিযানে ৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ২১ জনই জেনিনের বাসিন্দা।
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সদস্য বলে দাবি করা হলেও মন্ত্রণালয়টি বলছে, তাদের মধ্যে কিছু শিশুও রয়েছে।
গত ৫০ বছরে ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে যে বসতি গড়ে তুলেছে, সেখানে এখন সাত লাখের বেশ ইহুদীর বসবাস।
জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য সরকার এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব ইহুদী বসতি অবৈধ হলেও ইসরায়েল তার কোনো তোয়াক্কাই করেনি কখনো।
 
আরও পড়ুন
এই বিভাগের আরো খবর
 
                                    বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ হয়ে কানাডার ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প
 
                                    স্পন্সর ভিসা নিয়ে বড় সুখবর দিলো ইতালি সরকার
 
                                    ট্রাম্পকে খুশি রাখতে কূটনীতি ও প্রশংসায় পাকিস্তানের বাজিমাত
 
                                    হামাস চুক্তির শর্ত না মানলে ফের অভিযান চালাবে ইসরায়েল: ট্রাম্প
 
                                    




