টেকনিশিয়ান নেই, দুই যুগ বন্ধ এক্স-রে মেশিন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৩৭ পিএম, ৬ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই যুগের বেশি সময় ধরে টেকনিশিয়ান না থাকাতে এক্স-রে মেশিনের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ। শুরু থেকে হাসপাতালে তিনটি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে দুইটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি নতুন আরেকটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ পেয়েছে হাসপাতালটি। ফলে স্বল্প খরচের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকায় বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে এক্স-রে করতে হচ্ছে রোগীদের। তাছাড়া এক্স-রে কক্ষটিও এখন গুদাম রুমে পরিণত হয়েছে। কক্ষটিতে ভোল্টেজের বিদ্যুৎ, টেকনিশিয়ানের অভাবসহ কর্তৃপক্ষের নানা অজুহাতে প্যাকেট বন্দি থেকে নষ্ট হচ্ছে এক্স-রে মেশিনগুলো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের সেবা দানের জন্য ১৯৭২ সালে হাসপাতালটি স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে এক্স-রে মেশিনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। ওই সময় প্রায় ১৪ লাখ টাকার একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে ২০০৬ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা দামের আরও একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ হয়। কিন্তু নানা সমস্যার অজুহাতে এক্স-রে মেশিন দুটি আর চালু হয়নি। মাস তিনেক আগে ২৩ লাখ টাকা মূল্যের আরও একটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন আনা হয় হাসপাতালে। সেটিও হাসপাতালের এক্স-রে কক্ষে অব্যবহৃত অবস্থায় প্যাকেটবন্দি।
ভুক্তভোগী রোগী ময়নুল ইসলাম পংকি জানান, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে কুলাউড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে এক্স-রে করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে বাইরে থেকে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দেন। বাধ্য হয়ে বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এক্স-রে করি। এ জন্য ৬০০ টাকা খরচ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আরও অনেকে জানান, কুলাউড়া উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রোগীরা স্বল্প খরচে সেবা নেওয়ার জন্য এ হাসপাতালে আসেন। গুরুতর সমস্যায় রোগীদের এক্স-রে করার প্রয়োজন হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের বাইরে থেকে করাতে বলেন। উপায় না পেয়ে শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করাতে হয়। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে ৫০০-৬০০ রোগী, জরুরি বিভাগে ১০০-১৫০ রোগী ও ভর্তি হওয়া ৫০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন রোগীর এক্স-র করানোর প্রয়োজন হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার জানান, নতুন টেকনিশিয়ান নিয়োগ পেলে এক্স-রে মেশিন পুনরায় সচল করা হবে। টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, এক্স-রে মেশিন সচল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে টেকনিশিয়ান নিয়োগ চলমান আছে।