avertisements 2

অডিও ফাঁস 

‘জজ মানে জানিস তুই, জজ শব্দ বানান করতে পারবি তুই?’

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ এপ্রিল,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:০৪ পিএম, ৩ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফাইল ছবি

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই অভিভাবককে বিচারকের পা ধরতে বাধ্য করার ঘটনার একটি অডিওক্লিপ ফাঁস হয়েছে। এতে আলোচিত এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি অন্য শিক্ষকদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই অডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে রুবাইয়া ইয়াসমিন নামের ওই বিচারককে বলতে শোনা গেছে, ‘জজ মানে জানিস তুই, জজ শব্দ বানান করতে পারবি তুই?’

২১ মার্চ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে উপস্থিত সবার কথোপকথন ধারণ করা হয়েছে ওই অডিওতে। যেখানে অভিভাবক ও বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের পক্ষ নিয়ে সাধারণ অভিভাবক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। উচ্চপদস্থ ওই কর্মকর্তা চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন, এমনকি মামলাও করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন ওই প্রধান শিক্ষক।

এ ঘটনার পর বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। পরে নিজের অবস্থান থেকে ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেন বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন। যেখানে তিনি দাবি করেন, ভর্তির পর থেকেই তার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সহপাঠীদের কাছে র‍্যাগিং ও বুলিংয়ের শিকার হয়ে আসছিল। আর ঘটনার দিন অন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেননি বলেও জানান তিনি।

তবে অডিও ক্লিপে শোনা যায়, থাপ্পড় দিয়ে শিক্ষার্থীর দাঁত ফেলে দিতে চেয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে মামলার ভয়ও দেখিয়েছেন।

সম্প্রতি শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়া নিয়ে সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের মেয়ের অপ্রীতিকর পোস্টকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে মেয়ের কিছু সহপাঠী ও তাদের অভিভাবককে ডেকে পাঠান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক ও শ্রেণিশিক্ষকের উপস্থিতিতে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ভয় দেখানো হয়। এ সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয় যে; ভুক্তভোগী অভিভাবকরা ওই বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মার্চ দুপুর থেকে স্কুলের সামনে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার একদিন পর বিচারককে প্রত্যাহার করা হলেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।

আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এ বিষয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্তে অনিয়ম বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2