avertisements 2

বিএসএফের আপত্তিতে সড়কের কাজ বন্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ এপ্রিল,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪৪ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর কাছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় প্রায় তিনশ’ মিটার সড়কের পাকাকরণ কাজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তির কারণে বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে দফায় দফায় বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।

এ অবস্থায় ভারতীয় কুর্শাহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা একতরফাভাবে গত নয় দিন ধরে ওই সীমান্তের জিরো লাইনে লাল পতাকা উড়িয়ে ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রেখেছেন। একই সঙ্গে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।

বিজিবি বলছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিএসএফের আপত্তির বিষয়টি স্বাভাবিক। বিষয়টি সমাধানে দুই পক্ষের অলোচনা চলমান রয়েছে। গত ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।

সড়ক নির্মাণ সাইট সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্থায়নে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ফুলবাড়ী উপজেলার শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর নিকটবর্তী আছিয়ার বাজার থেকে নাগেশ্বরী উপজেলার কলেজ মোড় পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ ও পাকাকরণের কাজ শুরু করে ওটিবিএল নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ফুলবাড়ী উপজেলান শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের নন্দিরকুটি জুম্মারপাড়ের সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার নং-৯৩৭/৮ এস-এর নিকট থেকে ৯৩৮নং পিলার পর্যন্ত ফুলবাড়ী নাগেশ্বরী সড়কটি জিরো লাইনের কাছে হওয়ায় প্রায় ৩০০ মিটার সড়ক পাকাকরণসহ ৭৩ মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণ কাজে আপত্তি জানান ভারতের ৯০ বিএসএফ কুর্শারহাট ক্যাম্পের সদস্যরা।

এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ কয়েক দফা বৈঠক হয়। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সড়ক পাকাকরণ ও গাইড ওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে আশ্বাস দেয় বিজিবি। কিন্তু এরপরও সীমান্তে লাল পতাকা টাঙিয়ে জিরো লাইনে বাঁশের চৌকি তৈরি করে অবস্থান নেয় বিএসএফ। তারা সীমান্তের ওই অংশে টহল বৃদ্ধি করে। বিএসএফের এমন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ অংশে বিজিবিও লাল পতাকা লাগিয়ে টহল জোরদার করেছে।

এদিকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর টহল জোরদারে সীমান্তবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। জুম্মারপাড় সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান ও জহিরন বেওয়া জানান, বিএসএফের লাল পতাকা টাঙিয়ে ২৪ ঘণ্টা টহল দেখে এলাকাবাসী আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন। তারা বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য দু’দেশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

একই এলাকার বাসিন্দা ও ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতি বেগম জানান, যেভাবে বিএসএফ রাস্তার কাজের বাধা প্রদান করছে তাতে সীমান্তবাসী আতঙ্কিত। দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটির কিছু অংশ জিরো পয়েন্টে পড়ায় ওই অংশে নির্মাণকাজে বিএসএফ আপত্তি জানিয়েছে। পরে আমরা বিষয়টি বিজিবি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিজিবি আমাদের ক্লিয়ারেন্স দিলে ওই অংশের কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ তবে সড়কের অন্য অংশে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান সড়ক বিভাগের এই প্রকৌশলী।

লালমনিরহাট বিজিবি-১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম তৌহিদুল আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও দেশই পাকা বা স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে না। সড়কটির কিছু অংশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে পড়ায় বিএসএফ নির্মাণ কাজে আপত্তি করেছে। সড়কটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এবং জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আমরা বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের সড়কের ওই অংশের ডিজাইনও দেওয়া হয়েছে। তারা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।’

টহল জোরদারের বিষয়ে বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএসএফের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ। আমরা কোনও পক্ষই আক্রমণাত্মক নই। তারা তাদের অংশে টহল জোরদার করেছে। আমরাও আমাদের অংশে টহল অব্যাহত রেখেছি। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2