খাবার অপচয়ে বরকত নষ্ট হয়
                                    
                                    
                                        
                                            ডেস্ক রিপোর্ট
                                        
                                    
                                   
                                     প্রকাশ:  ১২:০০ এএম,  ২০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট:  ০৩:৪৬ পিএম,  ৪ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৫
                                
                        
                    ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবনবিধানের নাম। ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার একমাত্র সূত্র ইসলাম। পবিত্র কোরআন ও নবীজির সুন্নতেই রয়েছে মানুষের কল্যাণ। তাই মুমিনের উচিত, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনাগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করা।
নবীজি (সা.)-এর সুন্নতগুলো যথাযথ গুরুত্বসহ পালন করা। নবীজি (সা.)-এর অন্যতম সুন্নত হলো, খাওয়ার পর আঙুল চেটে খাওয়া। খাবারের অপচয় থেকে বিরত থাকা। কেননা খাবার মহান আল্লাহর নিয়ামত। এর অপচয় কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) খাওয়ার পরে তাঁর তিনটি আঙুল চাটতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কারো খাবারের লোকমা নিচে পড়ে গেলে সে যেন তার ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য তা ফেলে না রাখে। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমাদের তিনি থালাও চেটে খাওয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, তোমাদের খাদ্যের কোন অংশে বরকত রয়েছে তা তোমাদের জানা নেই। (তিরমিজি, হাদিস : ১৮০৩)
উল্লিখিত হাদিসের যথাযথ আমল করা গেলে একদিকে যেমন রাসুল (সা.)-এর একটি সুন্নত পালনের সওয়াব পাওয়া যাবে, তেমনি পৃথিবীও মুক্তি পাবে মহাবিপর্যয় থেকে। কারণ পৃথিবীব্যাপী খাবার অপচয়ের ফলে দ্রব্যমূল্য বিদ্যুতের গতিতে বেড়েই চলছে। যার ফলে অভাবী ও অনাহারী মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে গরিব দেশগুলোতে। এর প্রভাব যে কতটা ভয়াবহ তা কিছুটা আন্দাজ করার জন্য জাতিসংঘের একটি গবেষণাই যথেষ্ট।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) গবেষণা মতে, পৃথিবীর মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপচয় হয়। এর পরিমাণ বছরে প্রায় ১৩০ কোটি টন। অথচ অপচয় হওয়া বিপুল পরিমাণ এই খাবারের এক-চতুর্থাংশও যদি বাঁচানো যায়, তা দিয়ে ৮৭ কোটি দুস্থ মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব, যা আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার পাঁচ গুণ।
পৃথিবীজুড়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটায় কোটি কোটি মানুষ। অথচ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অপচয় হওয়া খাদ্যগুলো চলে যায় ডাস্টবিন কিংবা নর্দমায়। শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়েই খাবারের অপচয় হয় না, বিপণন পর্যায়েও পণ্যের মান বিবেচনা করতে গিয়ে নষ্ট করা হয় প্রচুর খাদ্য। এফএওর মহাপরিচালক হোসে গ্রাসিয়ানো ডি সিলভা জানান, বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্য অপচয় হয় তা সুইজারল্যান্ডের সারা বছরের মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির সমান।
তাইতো পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অপচয়কারী শয়তানের ভাই। ’ (সুরা : ইসরা, আয়াত : ২৭)
অপচয়কারীদের স্বয়ং আল্লাহও পছন্দ করেন না। ফলে অপচয় ও অপব্যয়ের কারণে মানুষের জীবন থেকে বরকতও হ্রাস পায়। এর ফলে মানুষের ধন-সম্পদ ক্রমে হ্রাস পায়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আহার করো ও পান করো; কিন্তু অপব্যয় করবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)
তাই আসুন, আমরা রাসুলের এই সুন্নতের ওপর গুরুত্বসহকারে আমল করে জীবনকে ধন্য করি। খাবার অপচয় না করে আত্মীয়-স্বজন ও অনাহারী মানুষের পাশে দাঁড়াই। এটা মহান আল্লাহর হুকুম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরকেও। আর কোনোভাবেই অপব্যয় কোরো না। (সুরা : ইসরা, আয়াত : ২৬)


                                    
                                    
                                    
                                    
                                    


