avertisements 2

সুদের টাকা না দেওয়ায় মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:৫২ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩২ পিএম, ২৪ এপ্রিল, বুধবার,২০২৪

Text

সংসারের স্বাচ্ছন্দতা ও সুখের আশায় জিনের বাদশার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সুদে আনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় এক পাওনাদার ও তার লোকজন বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাপুর এলাকায় গৃহবধু মমতাজ বেগম ও তার মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে মমতাজ বেগম বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় সাতজনের নামে মামলা করেছেন।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেন জানান, ভিক্টিমরা হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) ও তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমা (১৬)। ঝুমা মনিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী। মমতাজ একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি করেন। গত ৫ বছর আগে মমতাজ বেগমের স্বামী আব্দুর রশিদ মারা যান। এরপর মমতাজ বেগম তার একমাত্র মেয়ে ঝুমাকে নিয়ে বনের জমিতে বসবাস করে আসছেন। তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করে অনেক কষ্টে তার মেয়ে ঝুমাকে লেখাপড়া করিয়ে আসছেন। নানা অভাব-অনটনের মধ্যে কোন রকমে তাদের সংসার চলছে। সংসারের অভাব-অনটন মুক্তি পেতে মমতাজ সম্প্রতি এক জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়েন। সংসারের স্বাচ্ছন্দতা ফিরিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুাতিতে জ্বিনের বাদশা তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।

ভিক্টিম মমতাজ জানান, জি¦নের বাদশার ওই টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ করেছেন। কিন্তু নির্ধারিত ওই টাকা/সুদ পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। ওই টাকা ফেরত দেয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম এক মাসের সময় দিয়েছেন। আমি ওই টাকা ফেরত দিবো। কিন্তু ওই সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা বৃহস্পতিবার আমার বাড়ি ঘেরাও করে আমাকে ও আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেধে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

ঘটনার পর জড়িতরা পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে মমতাজ বেগম বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু তাদের সংসারে হানা দেয় একটি প্রতারক চক্র। ওই চক্রের গতকাল বৃহস্পতিবার তারা ওইদিন বিকেলে বিধবা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল গফুর জানান, তাদেরকে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাউকে বাধা বা মারধোর করা হয়নি। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম সিকদার জানান, ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেধে তাদের মারধর করছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেছি। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা একটি অভিযোগ দিয়েছে সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2