দ্বিতীয় যুদ্ধের পরিকল্পনা ইসরায়েলের, প্রস্তুত ইরান?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ জুলাই,শনিবার,২০২৫ | আপডেট: ০১:০৩ পিএম, ২৭ জুলাই,রবিবার,২০২৫

কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গেল মাসের শুরুর দিকে ইরানে বিমান হামলা করে ইসরায়েল। তেল আবিবের ধারণা পাল্টে দিয়ে ইসরায়েলে নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরানও। মিসাইল বৃষ্টিতে নাস্তানাবুদ হয়ে আমেরিকার দ্বারস্ত হয় ইসরায়েল। ইরানকে দমাতে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ৩টি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হয়ে হামলা করে মার্কিন সেনারা। তাদেরও উচিত জবাব দেয় ইরান। কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরানি বাহিনী। পরে প্রস্তাব আসে যুদ্ধবিরতির। টানা ১২ দিনের যুদ্ধের পর থামে দুদেশের সংঘর্ষ।
যুদ্ধবিরতির পর থেকে ওই ১২ দিনের যুদ্ধকে সাফল্য হিসেবে দেখছে নেতানিয়াহুর ইসরায়েল। দেশটির নেতারা বলছেন, ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা দুর্বল করা এবং যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জন্য রাজি করানো, সবই ছিল সেই যুদ্ধের অর্জন। ইরানও দাবি করেছে তারাই জিতেছে এই যুদ্ধে।
দুদেশের এই বাগযুদ্ধের মধ্যেই নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তেল আবিব। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি গ্যাসের প্যাডেল থেকে পা সরানোর কোনো ইচ্ছা রাখেন না। অর্থাৎ তিনি আবারও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই প্রকাশ করা হয়েছে।
আল জাজিরাকে দেওয়া একাধিক বিশ্লেষকের মত অনুসারে, ইসরায়েল বর্তমানে সেই সুযোগ খুঁজছে, যার মাধ্যমে ইরানকে আরও দুর্বল করা যাবে কিংবা শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে। তবে এ ধরনের অভিযান চালাতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছ থেকে তা সহজে মিলবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।
গেল ১২ দিনের যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল দাবি করেছিল, এটি ছিল আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। যার লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা। যদিও তেহরান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, তাদের কর্মসূচি কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছিলেন, তারা ইসরায়েলের যে কোনো নতুন সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত। তাদের সশস্ত্র বাহিনী আবারও ইসরায়েলের ভেতরে গভীরভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
ইরানবিষয়ক বিশ্লেষক ত্রিতা পারসি মনে করেন, নেতানিয়াহুর লক্ষ্য ইরানকে সিরিয়া বা লেবাননের মতো করে ফেলা। যেখানে ইসরায়েল প্রয়োজনে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারবে এবং কেউ তেমন প্রতিক্রিয়া জানাবে না। ইসরায়েল যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে চায়। কারণ তারা চায় ইরানকে এমন এক অবস্থা এনে দিতে, যাতে তা বারবার আঘাত করার জন্য উন্মুক্ত থাকে।