ডিজিটাল নিরাপত্তা ‘আইন’ নাকি ‘কালাকানুন’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৩৯ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৩৭ এএম, ২৩ আগস্ট,শনিবার,২০২৫

লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হয়েছে কারাগারে৷ একই মামলায় এখনো কারাবন্দি কার্টুনিস্ট কিশোর৷ ডিজিটাল আইনের অপ্রয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে সোচ্চার হয়েছে অনেকেই৷ এ আইন বিলুপ্তিরও দাবি উঠেছে৷
ঢাকায় বিক্ষোভ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন প্রণীত হয়, তখন থেকেই এই আইন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে এ আইন নিয়ে সমালোচনার মাত্রা আরো বেড়েছে৷ ঢাকায় সাংবাদিক সঞ্জয় দে ফেসবুক বার্তা দিয়েছেন এভাবে-
‘‘আইনে জামিন-অযোগ্য ধারা যুক্ত করা পুরোপুরি অসাংবিধানিক৷ তারপরেও সরকার বিভিন্ন আইনে এটা রাখে প্রথমত, জনগণকে তুষ্ট রাখতে (যেমন, নারী নির্যাতন দমন আইন) এবং দ্বিতীয়ত, নিজেদের স্বার্থে (যেমন আইসিটি আইন)৷ এই জামিন-অযোগ্য ধারার বিপুল অপপ্রয়োগ হয় বিচারিক আদালতে মামলা চলার সময় এবং এর শিকার মূলত ক্ষমতাহীন-দুর্বল পক্ষ৷’’একই যুক্তি দেখিয়ে ‘কালাকানুন’ বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি তুলেছে বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ও অনেক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট৷ তারা ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত থেকেই মুশতাকের মৃত্যুতে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলন করছে৷ প্রতিবাদী মশাল মিছিল শেষ করে এসে অনলাইন অ্যাক্টিটিভিস্ট ও লেখক কাওছার শাকিল জানালেন, কিছুদিন আগ পর্যন্তও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনই যথেষ্ট মনে করতেন তিনি৷ কিন্তু মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর মনে করছেন এ আইন রাখার উপযোগী না, কারণ, আইনটি থাকলে এর অপব্যবহার হবেই৷অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আসার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্যাটায়ারের পরিসর অনেক সীমিত, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে৷ তাই রাজনৈতিক স্যাটায়ার করার প্রবণতাও আগের তুলনায় কমে গেছে বলে তিনি মনে করেন৷ কোনো কোনো জাতীয় দৈনিকের সাপ্তাহিক রঙ্গ-ব্যাঙ্গাত্মক ক্রোড়পত্র বন্ধ পর্যন্ত হয়ে গেছে৷ এ প্রসঙ্গে কথা হয় লেখক ইমন চৌধুরীর সঙ্গে৷ একাধিক জাতীয় দৈনিকে রঙ্গ-ব্যাঙ্গাত্মক লেখা, কার্টুন সম্পাদনার অভিজ্ঞতা থাকা এই সাংবাদিক বলেন, ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেক মহলে অনেক আলোচনা আছে৷ এটা কঠোর হলে বা নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে সরকারের অবশ্যই দেখা উচিত৷ আর সোশ্যাল মিডিয়ার এই সময়ে বাক স্বাধীনতা নিশ্চিতে সরকারের সহনশীল আচরণ কাম্য৷ আবার জনগণের দিক থেকেও বাক স্বাধীনতার নামে যা খুশি তাই বলা ঠিক হবে না৷ দুপক্ষ থেকেই একটা সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে৷’’
কার্টুনিস্টকিশোরের মুক্তি দাবি
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদ গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাদের মুক্তির দাবিতে অনলাইনে সোচ্চার ছিলেন অনেকে৷ গতকাল থেকে কার্টুনিস্ট কিশোরের মুক্তির দাবি আরো প্রবল হয়েছে৷ তার শারিরীক অবস্থাও ভালো নয়- এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে৷
অন্যদিকে মুশতাকের মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি আছে কিনা, তা তদন্ত করার দাবিও তুলেছে আন্দোলনকারীরা৷ এরই মধ্যে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি অবস্থায় মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর কারণ জানতে ‘প্রয়োজনে’ তদন্ত কমিটি করা হবে৷ তবু মাঠ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে আন্দোলনকারীরা৷ ১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে তারা৷ তার আগে গণজমায়েত কর্মসূচিও চলতে থাকবে৷ এসব কর্মসূচি প্রসঙ্গে অনলাইন অ্যাক্টিটিভিস্ট ও লেখক কাওছার শাকিল ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে বলেন, কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরকার একটা আলোচনার পরিবেশ তৈরি করুক, যার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রতিকার হবে৷
উৎসঃ dw
আরও পড়ুন
এই বিভাগের আরো খবর

শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী পুলিশের এসআই মাদক পাচারে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রত্যাহার

কুয়াকাটায় জেলের জালে উঠল বিরল প্রজাতির অ্যাঞ্জেলফিশ

শিক্ষিকা স্ত্রীর বঁটির কোপে ব্যাংকার স্বামী গুরুতর আহত

এনসিপি যেন নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে, জিতে যাবে : মাহবুব কামাল
