avertisements 2

বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ মে,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:০৭ পিএম, ৩০ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দৃষ্টিনন্দন হলেও হরেক বিপত্তি মাথাচাড়া দেওয়া পরিবেশ পরিস্থিতির নির্মম শিকার। সেই পুরনো সামাজিক ব্যাধি, বাল্যবিয়ে আজও সংশ্লিষ্টদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিদ্যাসাগর যখন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সামাজিক অভিশাপ আর আবর্জনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন সেখানে তিনি বাল্যবিয়ে রোধের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। শুধু বাল্যবিয়ে বন্ধ নয় প্রতিষেধক হিসেবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলেন নারী শিক্ষাকেও। নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়াও উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তোলেন অবোধ বালিকাদের যেন বিয়ের পিঁড়ি অবধি যেতে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরিতে জোর দেওয়া হয়।

হাঁটুর ব্যথা দ্রুত নিরাময় করুন। জয়েন্টের ব্যথা একবারেই চলে যাবে জয়েন্টের ব্যথা শেষ করার একটি সহজ উপায় হাঁটুর ব্যথা দ্রুত নিরাময় করুন। আবার তরুণ বোধ করতে কি করতে হবে?

জয়েন্টের ব্যথা একবারেই চলে যাবে তিনি বললেন, একজন কন্যা শিশুকে বিয়ে দিতে যা খরচ হয় তার অর্ধেক করলে বালিকাটি শিক্ষা অর্জনে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। যা পরবর্তীতে তার চলার পথ সুস্থির করতে নিয়ায়ক ভূমিকা রাখে। এমন সব অমৃত বার্তা আমাদের সমাজকে সেভাবে আলোকিত করতে পারেনি। তাই একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে বাল্যবিয়ে নামক চিরায়ত ব্যাধিটি আজ অবধি সংশ্লিষ্টদের নাজেহাল করে তুলছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ দক্ষিণ এশিয়ায় কন্যা শিশুর অকাল বিয়ে সংক্রান্ত  এক গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করে। তাতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্যবিয়ের তথ্য-উপাত্তে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে শীর্ষে।

সমাজের সমসংখ্যক নারী শিশু বয়স যদি এমন অপরিণামদর্শিতায় আবর্তিত হয় তাহলে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন কিভাবে তার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাবে? আমাদের দেশে ৫১% মেয়ের বিয়ে হয় শিশু এবং কিশোরী বয়সে। যা অবধারিতভাবেই উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রাকে যথার্থ গন্তব্যে পৌঁছাতে বহুদূর পিছিয়ে দেবে। আবার বিশে^র মধ্যে এই বাল্যবিয়ের জায়গায় বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। এখানেও আমরা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে নেই।

৬ কোটি ৪৫ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে। তার মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখের বিয়ে হচ্ছে ১৫ বছরের নিচে। অসহনীয় এক চিত্র দেশের জন্য। যে কোনো সমাজ নিজস্ব কৃষ্টি, ঐতিহ্য সামাজিক মূল্যবোধ এবং চিরায়ত সংস্কারে আবদ্ধ থাকে। আধুনিকতার নতুন স্রোতে দীর্ঘদিনের অপসংস্কার বিলুপ্ত হওয়াও সময়ের অনিবার্য দাবি। কিন্তু সেই বিদ্যাসাগর কিংবা বেগম রোকেয়া থেকে সোচ্চার হওয়া পথিকৃৎরা আজ অবধি তাদের মূল্যবান বার্তা কেন বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হলেন তেমন প্রশ্ন সচেতন গবেষকদের উদ্বিগ্ন এবং উৎকণ্ঠিত করে। সময়ের স্রোতে পুরনো বিধিবদ্ধ সংস্কার নতুন আঙ্গিকে সমাজকে আলোকিত করবে সেটাই কাক্সিক্ষত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাস্তব প্রেক্ষাপট ঠিক তার উল্টো। বিদ্যাসাগর এবং বেগম রোকেয়া বাল্যবিয়ে রোধে আবশ্যিক পূর্বশর্ত হিসেবে নারী শিক্ষাকেও সর্বাধিক গুরুত্ব বিবেচনায় আনেন।

নারী শিক্ষা একেবারে পিছিয়ে আছে এমনটা বলাও মুশকিল। সমসংখ্যক এই অংশ শুধু শিক্ষা নয় বিভিন্ন পেশায়, কর্মদক্ষতায় এগিয়ে যাওয়ার চিত্রও উঠে আসছে। তবে গবেষণা প্রতিবেদনে যা দৃশ্যমান হয় তাতে বলা যায় সংখ্যায় তারা এত অপ্রতুল যা দেশের নেতিবাচক চিত্রকেই উপস্থাপন করছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে একজন শিশু কন্যার বিয়ের পিঁড়িতে বসা মানেই তার নিজেকে তৈরি করার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা শেষ হয়ে গেল। সেখানে ভর করবে অকাল মাতৃত্ব, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া ছাড়াও উন্নয়নের ধারাবাহিক প্রকল্পও পদে পদে হোঁচট খাবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2