ইউরোপে সমুদ্র পথে বিপজ্জনক যাত্রা : কেমন আছেন সেই বাংলাদেশিরা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৩৯ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০১ পিএম, ১৫ জুন,রবিবার,২০২৫

ভূমধ্যসাগরকে বলা হয় পৃথিবীর তিন মহাদেশের সন্ধি অর্থাৎ এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপ মহাদেশ এই ভূমধ্যসাগরের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে। সেই প্রাচীনকাল থেকে পরিবহন, বাণিজ্য ও সংস্কৃ’তি এই তিন মহাদেশকে একত্রিত করেছে। ইতিহাসবিদরা বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে এর জ্বলন্ত প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন এবং সভ্যতার বিবর্তনকে উন্মোচিত করে তা প্রমাণ করেছেন। ইউরোপে পাড়ি জমানোর জন্য অভিবাসীরা এই ভূমধ্যসাগরে নীল জলকে বেছে নিয়েছেন।
অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমাতে প্রধানত চারটি রুট বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে ভূমধ্যসাগরে হচ্ছে তিনটি রুট এগুলো হচ্ছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, কেন্দ্রীয় ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল। চতুর্থ রুট হচ্ছে স্থলপথে পশ্চিম বলকান অঞ্চল। এই তিনটি রুটির মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁ’কি’পূর্ণ রুট হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ২০২০ সালে অভিবাসীরা ইউরোপে পাড়ি জমানোর জন্য বেছে নিয়েছেন।
গত বছর ঝুঁ’কিপূর্ণ রুটে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গোচরিভূক্ত ৩৫ হাজার ৬২৮ জন অভিবাসী পাড়ি জমিয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি। এ রুটে সাধারণত তিউনিসিয়া এবং লিবিয়া উপকূল থেকে অভিবাসীরা ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। অন্যান্য রুটের চেয়ে এই রুটটি চরম ঝুঁ’কিপূর্ণ,
বলতে গেলে প্রতি মাসেই এই রুটে নৌকাডুবির খবর পাওয়া যায় এবং অভিবাসীরা উন্নত জীবনের আশায় নিজের জীবনকে বিসর্জন দিয়ে দেন। তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশিদের বেশিরভাগ অভিবাসী এই রুটে পাড়ি জমান। তবে সবগুলো রুটের অর্থাৎ পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে অভিবাসীদের আগমন কিছুটা কম থাকলেও ২০১৯ সালের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে পশ্চিম বলকান অঞ্চলে তবে কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের তুলনায় কম।
এই রুট সাধারণত একটু কঠিন হিসেবে ধরা হয় এবং অভিবাসীরা দীর্ঘদিন যাবত অপেক্ষা করতে হয় এখান দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করার জন্য। কিছুদিন আগে আমরা জেনেছি বেশকিছু বাংলাদেশি বসনিয়াতে অবস্থান করছেন সীমানা পাড়ি দেবার জন্য। তবে ধারণা করা হচ্ছে এই অভিবাসীরা ২০১৯ সাল থেকেই অনেকে অপেক্ষা করছেন।
এ সকল অভিবাসীরা জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে একসময় ইউরোপে পাড়ি জমাতে পারলেও জীবন এর চাকা ঘুরতে অনেক সময় নেয় কেননা ইউরোপের থাকতে হলে অবশ্যই তাকে বৈধভাবে বসবাস করতে হয়। তবে এই বৈধতার জন্য অনেকেই কিছুদিন থাকার সুযোগ হিসেবে আশ্রয়ের আবেদন করেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলতে গেলে প্রায় আবেদনের মাত্র ৫% গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়,
এবং পরবর্তীতে এই অভিবাসীরা জীবনযুদ্ধে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে হয়তো দেখা যায় জীবন সায়াহ্নে এসে বৈধ কাগজপত্র লাভ করেন; তবে ততদিনে জীবন ফুরিয়ে গেছে। উন্নত জীবন ধরা দিলেও সেই জীবনকে উপভোগ্য করে তোলা সম্ভব হয় না এবং অবশেষে স্বপ্নগুলো বেদনার নীল রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে থাকে। লেখক : ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী, সমাজকর্মী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, পর্তুগাল থেকে,
আরও পড়ুন
এই বিভাগের আরো খবর

৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র
_1741032368.jpeg)
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের নতুন রেকর্ড

ইতালি যাওয়া হলো না, লিবিয়া নিয়ে দুই যুবককে গুলি করে হত্যা

মালয়েশিয়ায় সর্বত্র ধর-পাকড়, বিপাকে প্রবাসীরা
