avertisements 2

অস্ট্রেলিয়ায় সার্চ ইঞ্জিন সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে গুগল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:৪৫ পিএম, ২৪ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

অস্ট্রেলিয়া সরকারের এক আইন অনুযায়ী, সংবাদ প্রতিবেদন প্রচারের জন্য টাকা দিতে হবে গুগল ও ফেসবুককে। এ টাকা পাবে গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু এতে নারাজ অনলাইন জগতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান দুটি। এতে বাধ্য করা হলে অস্ট্রেলিয়ায় সার্চ ইঞ্জিন সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে গুগল। আর ফেসবুক বলছে, এমনটা হলে অস্ট্রেলীয় ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে আর কোনো সংবাদের লিংক দেখতে পাবেন না।

মাসে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করেন ১ কোটি ৯০ লাখ অস্ট্রেলীয়। আর ফেসবুকের ক্ষেত্রে যার সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখ। কোম্পানি দুটি উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নিলে ভুক্তভোগী হবেন এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী। গুগলে যেমন তারা কোনো কিছু খুঁজতে পারবেন না, তেমনি ফেসবুকে দেখতে কিংবা পোস্ট করতে পারবেন না কোনো সংবাদের লিংক।


দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠান দুটি সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়ছে।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিষয়টি সরাসরি সরকারকে জানিয়েও দিয়েছে গুগল। তাদের মতে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য হুমকিস্বরূপ।

গুগলের অস্ট্রেলিয়ান ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেল সিলভা জানান, সরকারের আইনটিকে ‘কার্যকরী’ করে গড়ে তুলতে এতে পরিবর্তন চায় তার প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে তারা গণমাধ্যমগুলোকে কন্টেন্টের জন্য অর্থও দিতে ইচ্ছুক এবং বিশ্বব্যাপী এ ধরনের ৪৫০টি চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান, এ হুমকিতে ভ্রুক্ষেপ করবে না সরকার।


তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক। দেশে কী করা যাবে, সে বিষয়ে আইন প্রনয়ণ করে অস্ট্রেলিয়া। এটা আমাদের পার্লামেন্ট থেকে এসেছে, সরকার থেকে এসেছে। আর এভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় সবকিছু হয়। আর যারা এভাবে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক, তাদেরকে স্বাগতম।’

‘কিন্তু আমরা কোনো হুমকিতে ভ্রুক্ষেপ করি না।’

এদিকে, বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের লবিস্ট হিসেবে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘রিসেট অস্ট্রেলিয়া’র মতে, গুগল রীতিমতো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে।

এ বিষয়ে ফেসবুকও তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। অস্ট্রেলিয়ায় ফেসবুকের হেড অব পাবলিক পলিসি জশ ম্যাচিনের মুখে শোনা গেছে সেই একই হুমকির পুনর্ব্যক্তি।

তিনি জানান, ব্যবহারকারীর নিউজফিডে ঘুরে বেড়ানো কন্টেন্টগুলোর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ হলো সংবাদ। আর এ থেকে ফেসবুকের খুব একটা আয়ও হয় না।

তবে গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড্যান স্টিনটন সরকারকে জানান, ফেসবুকের এমন দাবি অসত্য। কারণ, সংবাদ প্রতিবেদনগুলো ব্যবহারকারীদের ফেসবুকে ধরে রাখে।

তাই ফেসবুক নিউজফিডে সাংবাদিকতার বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন স্টিনটন।

বিবাদমান নিয়মটি যাদের মস্তিষ্কপ্রসূত সেই অস্ট্রেলিয়ান কম্পিটিশন অ্যান্ড কনজ্যুমার কমিশনের প্রধান রড সিমস জানান, এর মাধ্যমে আলোচনায় বসার পথ সৃষ্টি হয়েছে। সচরাচর এমনটা না হলেও এর মাধ্যমে উভয়পক্ষ দর কষাকষি করতে পারে। কেবল এই পদ্ধতিতেই ব্যবসায়িক চুক্তিগুলো করা সম্ভব।

গুগল ও ফেসবুকের এমন অবস্থানকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন লেবার পার্টির শ্যাডো মিনিস্টার মিশেল রাউল্যান্ড।

‘কোটি কোটি ব্যবহারকারীকে সমস্যায় না ফেলে কেন গণমাধ্যমের পাশা দাঁড়ানো গেল না, ট্রেজারার জোশ ফ্রাইডেনবার্গ এবং যোগাযোগ মন্ত্রী পল ফ্লেচারকে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’

সার্চ রেজাল্টে আসা সংবাদ কন্টেন্টের জন্য গুগল যখন ৩০০টি ফ্রেঞ্চ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলো, সেদিনই অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে এমন ঘোষণা দিল প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, প্রতি তিনজনে একজন অস্ট্রেলিয়ান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিউজ ফিডে সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে চান বলে শুক্রবার প্রকাশিত এক জরিপে উঠে এসেছে।

এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৫ শতাংশ মনে করেন বেনামী অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত।

বিষয়: গুগল

আরও পড়ুন

avertisements 2